লেখক:সাজেদ আল শাফি
বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর ধরে চাকরির জন্য চেষ্টা করছি। কিন্তু ভাগ্য সহায় হচ্ছে না। রেজাল্টও খারাপ না। স্কুল,কলেজ সব জায়গাতেই চাঁদের মতো উজ্জ্বল হয়ে ছিলাম। এখন কেমন যেন মনে হয় সেই চাঁদের আলো শেষ হয়ে গেছে।
বাবা গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। স্কুলটি ছিল বাবার নিজের হাতে বানানো। আমাদের গ্রামে কোন স্কুল ছিল না। গ্রামের বেশীরভাগ মানুষই অশিক্ষিত।তারা বাচ্চাদেরকে পড়ানোর আগ্রহও দেখাতো না।বাবাই সবার বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাচ্চাদের কে তার স্কুলে নিয়ে আসতো। নিজের টাকায় বই,খাতা,চক,স্লে
আমার বাবা উত্তর দিলেন: আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। আমার দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। আমি সব শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। আমি একদিন মারা যাবো কিন্তু আমার দেশ থাকবে।আর সেদিন এই বাচ্চারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেদিন খুব ভালো লেগেছিল বাবার কথা টা। কিন্তু এখন খুবই বিরক্তিকর। কেন বিরক্তিকর সেটা জানিনা। এখন অবশ্য সেই স্কুলে শিক্ষক হিসেবে বাবা আর নেই। স্কুল বড় হয়েছে। নতুন নতুন শিক্ষক এসেছে।তারা নাকি শিশুদের পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। বাবাকে নাকি অবসর নিতে বলেছে। বাবার বয়স হয়েছে তাই। কিন্তু আমার বাবা তো এই বয়সেও দিনমজুরের কাজ করছেন।
অনেক দিন পর বাসায় ঢুকলাম। মায়ের মুখটা কেমন শুকনো। শরীর আগের থেকে অনেক খারাপ হয়ে গেছে। কিছু বলতে পারলাম না এই বিষয়ে।কি আর বলবো। সব কিছু ঢেলে আমাকে শহরে পড়াশোনা করালো। কিন্তু আমি তাদের জন্য কি করতে পারছি। কিছুই না। আম্মুর হার্টের অসুখ ছিল জানতাম। কিন্তু এখন আর কোনো অসুখের কথাই শুনিনা। আমি নিজেকে নিজেই সান্ত্বনা দেই এই বলে যে হয়তো ভালো হয়ে গেছে। আবার মাঝে মাঝে মনে হয় আম্মু হয়তো আমাকে কিছু বলতে পারছে না। আমাকে বললে আমি টেনশন করবো।অসৎ পথে টাকা উপার্জন করতে শুরু করবো এই জন্য।
ছোট করে আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম: আম্মু কেমন আছো?
রাতে বাবা ডেকে বললেন আমার সাথে নাকি কথা বলতে চান।
বাবার কাছে গিয়ে বসলাম। বাবাকে দেখে চোখে পানি আসতে চাইছিল।বহু কষ্টে আটকে রাখলাম।ষাটোর্ধ মানুষটার শরীরের কি অবস্থা। কাঁধের হাড়গুলো কেমন বের হয়ে আছে। চুপচাপ বসে আছি বাবার কাছে। বাবা বললেন: শফিক কে চেনো শাফি?
-কোন শফিক বাবা?
-আমার ছাত্র ছিল। তুমি যখন নাইনে পড়তে তখন একবার আমাকে দেখতে এসেছিল।
-আমার খেয়াল হচ্ছে না।কেন কি হয়েছে বাবা?
-গতকাল সে এসেছিল। তার সাথে আমার কথা হয়েছে।সে এখন অনেক বড় অফিসার। আগামী পরশু তার অফিসে ইন্টারভিউ হবে। তুমি সেখানে যাও। নিজের যোগ্যতা দিয়ে চাকরি নাও। আমি তাকে বলে দিয়েছি, আমার জন্য যেন তোমাকে চাকরি না দেয়।সে তোমার যোগ্যতা পরিক্ষা করে চাকরি দিবে।
-কিন্তু বাবা তোমাকে এই অবস্থায় রেখে আমি কিভাবে যাবো?
-আমার কিছুই হবেনা। তোমার সুখই আমার সুখ।কালই রওয়ানা হয়ে যাও।
-আচ্ছা বাবা।
ইন্টারভিউ দিয়ে বের হলাম। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি বাবা অনেকবার কল দিয়েছে। আমি কল ব্যাক করলাম। আম্মু কল ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল: তোর বাবার অবস্থা খুব খারাপ।
-কি হয়েছে বাবার?
-মন্ডলের কাজে গিয়েছিল। সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিল।
-বাবা কোথায় এখন?
-ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
-আমি আসছি।
বাবাকে ইমার্জেন্সিতে নেওয়া হয়েছে। একজন ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হয় বলল, রোগীর ভাই বা ছেলে কেউ আছে এখানে?
-আমি ছেলে।
ডাক্তার আমাকে তার কেবিনে নিয়ে গেল। বলল, আপনারা একটা মানুষকে কিভাবে এত কষ্ট দিতে পারেন। আমি বললাম, কেন কি হয়েছে স্যার?
-আপনার বাবার পাকস্থলীতে অনেক বড় টিউমার। টিউমারটির বয়স আমরা অনুমান করতে পারছি না। এতদিন ধরে পাকস্থলীতে টিউমারের ব্যথা সহ্য করা একজন সাধারণ মানুষের কাছে অসম্ভব। আর এই অবস্থাতেও আপনার বাবা কাজ করতে গিয়েছিল।
-স্যার এখন আমার বাবার কি অবস্থা?
-দুঃখিত তিনি আর নেই।
*বেশীরভাগ-> বেশিরভাগ।
*দিব-> দিবো।
*জানিনা-> জানি না।
*শুনিনা-> শুনি না।
*ছোট করে বললাম আম্মু কেমন আছো?-> এতটুকু বলার পর আম্মুর সাথে খানিক্ষণ কথোপকথন করা উচিত ছিল।
*সান্তনা-> সান্ত্বনা।
*অনেক দিন-> অনেকদিন।
*শুনিনা-> শুনি না।
*কিভাবে-> কীভাবে।
*কি-> কী (যেহেতু প্রশ্নটার উত্তর হ্যাঁ কিংবা না’তে দেয়া সম্ভব নয়, তাই এখানে ‘কী’ হবে।)
*হবেনা-> হবে না।
*বের হয় বলল-> বের “হয়ে” বলল।
ভালোবাসার আরেক নাম হচ্ছে বাবা। সবসময় বায়না রাখার আরেক নাম হচ্ছে বাবা। বাবারা নিজেদের ক্ষেত্রে কিপ্টে হলেও সন্তানদের ক্ষেত্রে হয় অসীম হৃদয়ের একজন চমৎকার মানুষ। আর সেই মানুষটাকে আমাদেে সমাজের এমন সন্তান রয়েছে যারা সেই বাবার ভালোবাসাটাকে বুঝতে পারে না। ছুড়ে ফেলে দেয় বৃদ্ধাশ্রম নামক ওই নরকে। যাই হোক গল্পটা পড়তে গিয়ে মনটা সত্যিই বিষণ্নতায় ভরে উঠলো। বানানগুলো এডিট করে নিলে গল্পটা আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে আমি মনে করি। আপনার জন্য রইলো অনেক অনেক শুভকামনা।
*রুম মেট-> রুমমেট।
*বেশীরভাগ-> বেশিরভাগ।
*দিব-> দিবো।
*জানিনা-> জানি না।
*শুনিনা-> শুনি না।
*ছোট করে বললাম আম্মু কেমন আছো?-> এতটুকু বলার পর আম্মুর সাথে খানিক্ষণ কথোপকথন করা উচিত ছিল।
*সান্তনা-> সান্ত্বনা।
*অনেক দিন-> অনেকদিন।
*শুনিনা-> শুনি না।
*কিভাবে-> কীভাবে।
*কি-> কী (যেহেতু প্রশ্নটার উত্তর হ্যাঁ কিংবা না’তে দেয়া সম্ভব নয়, তাই এখানে ‘কী’ হবে।)
*হবেনা-> হবে না।
*বের হয় বলল-> বের “হয়ে” বলল।
ভালোবাসার আরেক নাম হচ্ছে বাবা। সবসময় বায়না রাখার আরেক নাম হচ্ছে বাবা। বাবারা নিজেদের ক্ষেত্রে কিপ্টে হলেও সন্তানদের ক্ষেত্রে হয় অসীম হৃদয়ের একজন চমৎকার মানুষ। আর সেই মানুষটাকে আমাদের সমাজের এমন সন্তান রয়েছে যারা সেই বাবার ভালোবাসাটাকে বুঝতে পারে না। ছুড়ে ফেলে দেয় বৃদ্ধাশ্রম নামক ওই নরকে। যাই হোক গল্পটা পড়তে গিয়ে মনটা সত্যিই বিষণ্নতায় ভরে উঠলো। বানানগুলো এডিট করে নিলে গল্পটা আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে আমি মনে করি। আপনার জন্য রইলো অনেক অনেক শুভকামনা।