আসিফ আহমেদ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)”।
–আলহামদুলিল্লাহ, ইসলাম ধর্ম, একমাত্র স্রষ্ঠার ধর্মে প্রবেশ করার জন্য আল্লাহর প্রতি অসংখ্যা শুকরিয়া।
–আলহামদুলিল্লাহ, আমিও সত্য ও সঠিক পথে ফিরতে পেরেছি।
–তা প্রদীপ, তোমার নাম আজ থেকে মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ। আর তোমার বউ সরমীর নাম আজ থেকে মোছাঃ খাদিজা আক্তার। কারণ এই নাম দুটি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়।
–আলহামদুলিল্লাহ।
–আচ্ছা আবদুল্লাহ, তুমি তোমার বাপ-দাদার ধর্ম হিন্দু ধর্ম ছেড়ে আমাদের এই ইসলাম ধর্মে পদার্পণ কিভাবে করলে? মানে আমাদের ধর্মের কোন দিক টা তোমাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে অনুপ্রাণিত করলো?
–সে এক মস্ত বড় কাহিনী।
–আমাদের শোনাও সেই কাহিনী, না হয় সংক্ষেপেই শোনাও।
–আচ্ছা বলি তাহলে শুনুনঃ-
সেদিন শুক্রবার ছিলো। আমি শহর থেকে ফিরছিলাম দুপুরবেলা। কিন্তু গ্রীষ্মের দুপুরের এই প্রচণ্ড খরতাপে ক্লান্ত দেহটা নিয়ে চলতে পারছিলাম না বলে সামনের একটা বটগাছ তলায় বসেছিলাম একটু জিরিয়ে নিতে। হঠাৎই চারদিকের পিনপতন নিরবতা ভেদ করে আমার কানে আসতে লাগলো সামনের মসজিদ থেকে ভেসে আসা হুজুরের বজ্র কণ্ঠের আওয়াজ। আমি সেদিকে মনযোগ দিলাম। হুজুর খোতবায় তখন বলছিলেন,
“প্রথমেই প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তা’লার, যিনি আমাদের একমাত্র প্রতিপালক। তারপর শুকরিয়া জ্ঞাপন করি এজন্য যে আমরা শেষ নবীর উম্মাত। আল্লাহ বলেছেন,
আমি বান্দাদের সকল গোনাহ মাফ করবো তবে শিরক ব্যতীত। তাই আল্লাহর সাথে কখনোই কাউকে তুলনা করার কথা বলাও যাবে না।
অথচ হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সহ অন্য ধর্মের লোকেরা অনেক দেবদেবীর পূজা করে।
সামান্য কিছু উদাহরণ দেই আপনাদের মাঝে।
ধরুন আমাদের গ্রামে দশজন ক্ষমতাধারী লোক আছে। এরা চাইলেই সব কিছু করতে পারে। এলাকার সবাই তাদের ভগবান মানে। এখন গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমের দিন চলছে। এলাকার সবাই সেই দশজনের কাছে কাছে গিয়ে বললো বৃষ্টির দানের জন্য। এখন সেই দশজনের মধ্যে কেউ একজন বললো দু’দিন বৃষ্টি হবে। অপরজন বললো না, শুধু আজকের দিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হবে। আরেকজন বললো না, এই সপ্তাহ জুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। এভাবে একেকজন একেক মতামত দিলো। শুরু হয়ে গেলো নিজেদের মধ্যে ঝামেলা।
এভাবে একটা দলে যদি এগারো জনই নেতা হয় তবে সেই দল কি পরিচালনা করা যায়? যায় না। কারণ, সেখানে সবাই যে যার ক্ষমতা দেখাতে ব্যস্ত হয়। অথচ সবাই যদি একজন নেতাকে অনুসরণ করে তবে নেতা যা বলে সবাই তাই শোনে।
আলহামদুলিল্লাহ। আমরা হলাম সেই মুসলিম জাতি। আমরা এক আল্লাহর পূজারী। একমাত্র তার কাছেই মাথা নত করি আর সব কিছু তার কাছেই চাই৷ অথচ হিন্দুরা, তারা এমন সব জিনিসের পূজা করে যা তারা নিজের হাতেই তৈরি করে আবার নিজেরাই ভেঙে ফেলে। যে মাটির তৈরি জিনিসের কোন প্রাণ নেই এমন কি সেই মাটিও মহান আল্লাহর সৃষ্টি।
আমাদের ইসলাম সম্পর্কে জানতে হবে,বুঝতে হবে তারপর মানতে হবে। পূর্বপুরুষরা মুসলিম বলে আমাদের মুসলিম হলে চলবে না, আমাদের ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখতে হবে।
হুজুর আরও কিছু সময় বয়ান দিয়ে নামাজ শুরু করলেন। আমি হুজুরের বয়ান শোনায় এতটাই মগ্ন ছিলো যে বাড়ি ফেরার কথা ভুলেই গেছিলাম। পরে বাড়ির পথে ফিরতে শুরু করলাম তবে মনটা কেমন যেন হয়ে গেছিলো মসজিদের ঐ হুজুরের বয়ান শুনে। সারা পথ শুধু হুজুরের কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই শেষ হলো।
আমি ছোটবেলা থেকেই অনেক আলাদা ছিলাম৷
যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম তখন দেখতাম ক্লাসের বেশিরভাগ ছেলেমেয়েরা ইসলাম শিক্ষা বই পড়ে আর আমরা কিছু ছেলেমেয়ে হিন্দুধর্ম শিক্ষা। তখন থেকেই আমার মাথা শুধু একটা কথাই বেশি ভাবাতো তা হলো,
ওদের প্রভু আল্লাহ আর আমাদের অনেকে। এমন কি করে হয়? ওদের আল্লাহর সাথে মারামারি লাগে না?
আস্তে আস্তে আমি বড় হতে থাকলাম তবে আসল প্রভু কে তার উত্তর মিললো না। তবে বাবার কাছে জানতে চাইতাম কিন্তু বাবা বকাঝকা করতো আর বেশি বুঝতে মানা করতো।
ঘটনাক্রমে সেদিন আবার ছোটবেলার সেই প্রশ্নটা নাড়া দিয়ে উঠলো হুজুরের বয়ান শুনে।
রাতে ঘুমাতে গিয়েও ঘুম আর আসছিলো না আমার। এ’কাত ও’কাত করছিলাম আর হুজুরের কথা গুলো ভাবছিলাম। সরমী কি হয়েছে জানতে চাইলে কিছু বলি নি। তবে না ঘুমিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করি। অনেক ভেবে মনে মনে ভাবি,
আমাকে কুরআন গবেষণা করতে হবে। এতেই কেবল আমি রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।
আমি গুগল থেকে কুরআনের পিডিএফ নামিয়ে নিলাম তখনই। বাংলা অর্থ সহ। তারপর পড়া শুরু করলাম।
আমি যতই কুরআনের এক একটা করে সূরা,আয়াত পাঠ করছিলাম ততই অবাক হচ্ছিলাম!
আল্লাহ এক, তাঁর কোনো শরীক নেই। তিনিই একমাত্র পরিচালক এই সমগ্র পৃথিবীর।
আমি আয়াতের সাথে আমার ধর্মের মিল খুঁজলাম। আমাদের প্রভু অনেক। সবাই শরীক।
আমাদের দেবদেবীর সংখ্যা তেরো জনেরও বেশি। এক এক বংশের লোক এক এক দেব-দেবীকে মানে। কিন্তু আসল প্রভু কে?
আমি আবার ভাবলাম,
টিভিতে আমাদের ধর্মের বিভিন্ন দেব-দেবতার কাহিনী দেয়। সেখানে দেখা যায় তারা নিজেরাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। অসুরদের সাথে তাদেরই সব সময় হাঙ্গামা লেগেই থাকে। তারা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত তাহলে আমাদের বাঁচাবেন কখন? আমাদের অসুবিধা দেখবেন কখন?
অথচ আল্লাহ এক। সমস্ত প্রাণীকূল সহ সব কিছুই তার মুখাপেক্ষী। তার সাথে কারও তুলনা হয় না। তার কথাতেই দিন এবং রাত হয়। সব কিছুই তার হুকুমে চলে।
আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে কুরআনের আয়াত পড়ছিলাম রাতভর আর আমার ধর্মের সাথে মিলাচ্ছিলাম।
ইসলাম ধর্মে কোন জাতি ভেদাভেদ নেই, নেই কোন বংশ মর্যাদাও। অথচ আমাদের ধর্মে কত বৈষম্য!
ইসলাম ধর্মে নারীর মর্যাদা দেখে আমি হতবাক হয়েছিলাম। মায়ের মর্যাদা বাবার থেকেও তিনগুণ বেশি যেখানে অন্য কোন ধর্মে নারীর এমন সম্মান, অধিকার দেয়াই হয় নি। আমি আরও মনোযোগ দিয়ে কোরআনের আয়াত পড়ছিলাম। আমি যখন নবীদের জীবন কাহিনী পড়ছিলাম তখন চোখ দিয়ে কখন যে অশ্রু ঝড়তে শুরু করেছিলো তা বুঝতেই পারি নি। তাঁরা কতটা মহান ছিলেন! কতটা সত্যবাদী, আদর্শবান, চরিত্রবান ছিলেন তাঁরা। তাঁরা ছিলেন পরপোকারী ও ন্যায়বান। অথচ আমাদের ধর্মে শিব,রাম কৃষ্ণ এদের কাহিনী একদম বিপরীত। এরা বিভিন্ন অপকর্ম করতো তার কথা আমাদেরই জানা।
নবীরা এতটা মর্যাদা পাওয়া সত্তেও ছিলেন সাধারণ মানুষের মত, তাঁরা কখনোই অহংকার করেন নি।
এরপর আমি যখন দেখলাম কুরআনে জীবন গঠনের দিক সমূহ, জীবন পরিচালনা করার উপায় সমূহ, ব্যবসা-বানিজ্য করার কথা, হারাম-হালাল ইত্যাদি বিষয় তখন মনে হলো কি নেই এই এ বইটাতে!
একজন মানুষের জীবন সুন্দর করার, সংসার সুন্দর করার,সমাজ পরিচালনা করার,রাষ্ট্র পরিচালনা করার সব, সব কিছুর কথাই বলা হয়েছে এখানে।
আমার শরীর প্রচণ্ড কাঁপছিলো তখন। আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলাম না। শুধু মনে হচ্ছিলো আমরা সবাই কত বড় ভুলের মাঝে বসবাস করছি।
আমি এক রাতে প্রায় কুরআনের সব পড়া শেষ করেছিলাম। তারপর খুব সকালে উঠে ভাবলাম কিছু একটা করি। ঘরে থাকা ছোট ছোট মূর্তি গুলো হাতে নিয়ে মেঝেতে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেললাম। সরমীর ঘুম ভেঙে গেলো। বললো,
এ কি সর্বনাশ করলে!
আমি ওকে চুপ করতে বললাম। ও বললো,
জানো কত বড় অনিষ্ঠ করলে তুমি? সংসারে অভিশাপ লাগবে।
আমি বললাম,
কি করবে এই মাটির পুতুল?
ও বললো,
তোমায় ধ্বংস করে দেবে। ওর আর আমার কথা শুনে মা-বাবা ঘরে এসে জানতে চায় কি হয়েছে। সরমী সব খুলে বলে। তখন বাবা রাগে আমাকে খুব জোরে থাপ্পড় দেয়। আমি কিছু বলি না। বাবা জানতে চায় কেন এ কাজ করলাম। আমি তখন সরাসরিই বলি,
আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করবো। আমার কথা শুনেই বাবা আমাকে বেধড়ক মার শুরু করেন। আর বিভিন্ন দেবতার অভিশাপ দেন সথে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আমি সরমীকে নিয়ে আমার এক বন্ধুর বাড়িতে যাই। তারপর সরমীকে শুরু থেকে সব বলি, বুঝাই ওকে। কুরআনের বানী গুলো পড়ে শোনাই। ও বলে,
তোমার কথা সত্য হলে আমিও তোমার সাথে আছি।
ওর কথাতে জোর পাই আমি। নেটে সার্চ দিয়ে ওকে ইসলামের অনেক কিছু দেখাই। লাখ লাখ মানুষ ইসলাম গ্রহন করছে সেটাও দেখাই। সরমীও অল্প সময়েই বুঝে যায়। আমি ঠিক করি বাসায় গিয়ে মা-বাবাকেও বলবো ইসলাম গ্রহন করতে।
তিনদিন পর বাড়ি গিয়ে বাবাকে বলি যে, চলো সপরিবারে ইসলাম গ্রহন করি। তবে বাবা হুংকার দিয়ে বলেন তুই আমার ছেলে না। বাবার চিৎকার শুনে লোকজন জড় হয়ে যায়। সবাই ব্যাপারটা শুনে আমাকে অনেক কথা শোনায়। ইসলাম নিয়ে নানান কথা বলে। আমিও তাদের কথার জওয়াব দেই। একসময় গ্রামের পঞ্চায়েতরা আমাকে এলাকা হতে চলে যেতে বলেন। বাবাও আমাকে ত্যেজ্য পুত্র ঘোষণা করেন। সাথে সরমীর মা-বাবাও ওকে নিয়ে যেতে চান। তবে ও আমাকে ছাড়া যেতে নারাজ হলে ওকে ও ত্যেজ্য করে ওর পরিবার। গ্রামের সবার শত কথা, অভিশাপ আর মার খেয়ে দু’জনে এক কাপড়ে ঘর ছাড়ি। তারপর শহরে এসে সরমীর গলার স্বর্ণের চেইন টা বিক্রি করে আপাতত থাকার ব্যবস্থা করি। আর আজ আপনার কাছে এসে ইসলাম গ্রহন করলাম।
আলহামদুলিল্লাহ, আজ আমি অনেক অনেক খুশি। আমি যে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরতে পেরেছি এটাই আমার জন্য সব’চে বড় পাওয়া।
–আলহামদুলিল্লাহ, তোমার গল্প শুনে যে আমার কি পরিমাণ খুশি লাগছে তা তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না। আবদুল্লাহ, আল্লাহ এমনই। তিনি যাকে হেদায়েত দান করেন তাকে কেউ অনিষ্ঠ করতে পারে না আর যাকে আল্লাহ হেদায়েত দান করেন না সে কখনোই দ্বীনের পথে ফিরতে পারে না।
–আসলেই তাই। আল্লাহই হেদায়েতের মালিক। তা না হলে এত বছর ধরে আমি যা পারলাম না সেদিন, সেই হুজুরের বয়ান শুনে হঠাৎ মনের ভিতর নাড়া দিয়ে উঠলো আর আমি সব বুঝতে পারলাম।
–একদম ঠিক। আবদুল্লাহ, আমার একটা কথা ছিলো।
–বলুন।
–তোমরা নব মুসলিম দম্পতি। এত বড় ঝড়,ঝাপটা পার করে এসেছো। হাতেও টাকা পয়সা নেই। আজ থেকে তোমরা আমার কাছেই থাকবে।
–আমি আপনার কথার অমান্য করবো না। সব কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়। নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন।
–আবদুল্লাহ, খাদিজা তোমরা সব সময় ইসলামের সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলবে। তোমরা এখন ফুলের মত পবিত্র। তবে তোমাদের ও গুনাহ লেখা হবে এখন থেকে। আশা করি দ্বীনের পথ থেকে পিছপা হবে না।
–ইনশাআল্লাহ, দোয়া করবেন। যতদিন এ দেহে প্রাণ আছে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলেই যেন থাকতে পারি।
–আল্লাহ তোমাদের কবুল করুক, আমিন।
–আমিন।
আমি খাদিজাকে নিয়ে হুজুরের সাথে তার বাড়ির দিকে রওনা হলাম। গাড়িতে বসে ভাবছি,
আল্লাহ কি না পারেন। এইতো কিছুদিন আগেও আমি ছিলাম প্রদীপ কুমার নামের হিন্দু এক ছেলে। আর আজ তাঁর হেদায়েতে আমি আবদুল্লাহ আর আমার স্ত্রী খাদিজা।
মনে মনে বললাম,
হে আল্লাহ, তোমার পথের পথিক হয়ে পথ চলা শুরু করলাম। তুমি আমাকে ইসলামের রশিটা আঁকড়ে ধরে রাখার মত ক্ষমতা দিও। তুমিই একমাত্র দয়াময় ও পরম করুণাময়। আমাকে তুমি কবুল করে নিও।
অন্ধকার থেকে দ্বীনের পথে ফেরানোর জন্য আবারও তোমার কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া জানাই,
আলহামদুলিল্লাহ।
আসিফ আহমেদ
সুব হান আল্লাহ। যখন গল্পটা পড়ছিলাম, খন যেন গতল্পটার ভেতর ঢুকে যাচ্ছিলাম। হঠাত করেই মনে হলো শেষ হয়ে গেলো? আর একটু বড় হলো না কেন? খুবই সুন্দর গল্প। পড়ার সময় একটুও বিরক্তি লাগেনি। আর বার বার মনে হয়েছে আমরা মুসলিম হয়েও অনেকে যা করতে পারিনা সেটাই এই ভাই করে দেখিয়েছেন। আলহা্মদুলিল্লাহ।
আমি হুজুরের বয়ান শোনায় এতটাই মগ্ন ছিলো যে বাড়ি ফেরার কথা ভুলেই গেছিলাম।
উপরের বাক্যটি এরকম হবে — আমি হুজুরের বয়ান শোনায় এতটাই মগ্ন ছিলাম যে বাড়ি ফেরার কথা ভুলেই গেছিলাম।
আল্লাহর একমাত্র মনোনীত জীবন ব্যবস্থা হলো ইসলাম। ইসলাম শান্তির ধর্ম। একজন অমুসলিম ব্যক্তিকে মুসলিম হতে হলে অনেক বাধা পেরুতে হয়। একজন অমুসলিমের ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার ঘটনাটা সত্যি দারুণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এই গল্পে।
আমি শুধু গল্পের সমালোচনা করবো, প্রদীপ সম্ভবত বাংলাদেশের। তা ভাই, বাংলাদেশে কি খুতবা বাংলাতে দেয়? না প্রদীপ খুব ভালো করে আরবি জানতো? সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কোরআনের সব বিষয় তোর্জুমা বুঝিয়েছেন, তা ভাই এক রাতে কি আদৌ তা পড়ে শেষ করা সম্ভব? নাহ্, কখনোই না। ইসলাম ধর্মে বুঝি কোনো বংশ নেই? এরকম আরও ফল্ট আছে, যা লেখকের অজ্ঞতাবশত ভুল হয়। তখন গল্পটিকে সাহিত্য মানে বিচার করা মুশকিল হয়ে যায়। শুধুমাত্র ভালো প্লট হলেই গল্পের ভালো মান হয় না। এর জন্য গভীরতার দরকার। আশা করি, গল্প লেখার ক্ষেত্রে এসব দিকে খেয়াল রাখবেন যাতে দিনশেষে তা গাঁজাখুরি গল্প বলে মনে না হয়।
শুভ কামনা রইলো।