মোঃ সোয়াইব হোসেন।
গ্রামটির নাম শীতলপুর। গ্রামের নামের মতই মানুষগুলো শান্ত প্রকৃতির। সেই গ্রামেই বাস করতো দুই বন্ধু সবুজ আর মিলন। সবুজ ছিল অনেক সম্পদের মালিক। তার গোয়াল ভরা গরু ছিল। পুকুর ভরা মাছ ছিল। মাঠ ভরা ফসল ছিল। ছিল অনেক গাছ-পালা। এগুলো নিয়ে তৈরি ছিল চমৎকার এক বাড়ী। অপরদিকে মিলন ছিল একজন সাধারন মানুষ। তেমন কোন সম্পদ ছিল না তাই বলে গরিব ও বলা যাবে না। কোন রকমে সংসার চলে। সে একটু লোভী ছিল। সবুজ আর মিলনের মধ্যে ছিল খুব ভাব। সবুজ মিলনকে খুব বিশ্বাস করতো। মিলন যে সম্পদ দিয়ে তার সমান নয় এ নিয়ে সে কখনো কটু কথা বলে নি। বরং সে মিলনের বিপদে-আপদে পাশে দাড়িয়েছে। অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে। কখনো বা খাদ্য,বস্ত্র, বাসস্থান দিয়ে। এভাবে তাদের দিন কাটতে থাকে।
হঠাৎ একদিন সবুজ সিদ্ধান্ত নেয়, সে তার স্বপরিবার নিয়ে দেশের বাহিরে যাবে। কিন্তু তার এত সম্পদ কার কাছে রেখে যাবে? মিলন ছিল তার একমাএ বিশ্বাসী বন্ধু। তাই সে কোন কিছু না ভেবে তার সব সম্পদের দায়িত্ব দিয়ে যায় মিলনকে।
মিলন তার বন্ধুর সব সম্পদ দেখাশুনা করতে থাকে।
কিন্তু ঐ যে লোভ যা মানুষকে নিচু করে দেয় সেই লোভের কবলে পরে মিলন। এত সম্পদ হাতে পেয়ে সে নিজেকে শামলিয়ে রাখতে পারে নি। সে তার ব্ন্ধুর সব সম্পদ ভোগ করতে থাকে। পুকুরের মাছ, গোয়ালের গরু, মাঠের ফসল, গাছ-পালা সব বিক্রি করে দেয়। তার ব্ন্ধু সবুজকে মিথ্যা কথা শুনিয়ে নয়-ছয় হিসাব দিয়ে সব সম্পদ লুটে নিতে থাকে।
সবুজ তাকে অন্ধ বিশ্বাস করতো তাই সে মিলনের কথা মেনে নিতো।
একদিন মিলন বাড়ী ফেরার পথে রাস্তায় দেখে একটি কুকুরের বাচ্চা খাবারের সন্ধান করছে। তখন সে কুকুরের বাচ্চাটাকে তার সাথে করে বাড়ী নিয়ে আসে। সে বাচ্চাটাকে পালতে থাকে এবং একসময় বাচ্চাটা বড় কুকুরে পরিণত হয়।
কুকুরটা মিলনের সাথে থাকে।
মিলনের একদিন খুব দই খাওয়ার ইচ্ছে হয়। সে তার গিন্নীকে বলে দই তৈরি করার জন্য। কথা মত কাজ এক হাঁড়ি দই তার সামনে হাজির করে তার গিন্নী। দই পেয়ে সে মহাখুশি, সে দইয়ের হাঁড়ি ঘরের বারান্দায় রেখে হাত-মুখ পরিস্কার করতে যায় পুকুরে। কিছুক্ষন পর তার হঠাৎ মনে হয় তার হাঁড়ির সামনে সে যে কুকুরকে রেখে এসেছে! কুকুর বুঝি তার সব দই খেয়ে ফেললো। এই ভেবে সে দ্রুত বারান্দার সামনে হাজির হলো এবং যা দেখলো তা দেখে সে অবাক হয়ে গেলো। সে দেখলো অনেকগুলো কুকুর তার হাঁড়িতে রাখা দই খেতে চাচ্ছে কিন্তু তার পালিত কুকুর তা খেতে দিচ্ছে না। এতে করে অন্য কুকুরগুলো তার কুকুরকে আঘাত করছে, রক্তাক্ত অবস্থায় কুকুর যুদ্ধ করেই যাচ্ছে এবং এক পর্যায়ে কুকুরটি মৃত্যুবরণ করে।
তখন সে বুঝতে পারে একটি কুকুর তার মনিবের নুন খাওয়ার কারনে মনিবের জন্য নিজের জীবন দিতে পারে। কিন্তু যে তাকে বিপদে-আপদে সাহায্য করতো, অসময়ে পাশে দাড়াতো তাকে এভাবে ঠকানো যায় না, তার সাথে প্রতারনা করা যায় না, তার বিশ্বাস ভঙ্গ করা যায় না।
মিলন বুঝতে পারে সে লোভের কবলে পরে যা করছে তা অন্যায় , তা ঠিক নয়। সে নিজে অনুতপ্ত হয়। সে সবুজের কাছে তার সব ঘটনা বলে এবং ক্ষমা চায়, সবুজ তাকে ক্ষমা করে দেয়।
একটা ইতর প্রাণী থেকেও আমরা শিক্ষা লাভ করতে পারি। সেও আমাদেরকে নতুন কিছু শিখিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। গল্পের প্লটটা অনেক ভালো ছিল।
গাছ-পালা — গাছপালা
বাড়ী — বাড়ি
— নি সবসময় শব্দের সাথ যুক্ত হয়।
বেশ শিক্ষণীয় একটা ব্যাপার আছে গল্পতার মধ্যে, খুব ভালো লেগেছে তবে আর একটু বড় হলে গল্পটা ভালো হত
চমৎকার একটি ছোটগল্প।অনেক কিছু শিখার আছে এই গল্প থেকে।ভালো লেগেছে।শুভকামনা নিরন্তর