ফারজানা নীল
অদিতি হাসিখুসি প্রাণবন্ত একটা মেয়ে। পড়াশুনোয় বরাবরই সে খুব ভালো । অদিতি যখন উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে তখনি একটা এক্সিডেন্ট এ তার বাবা কর্মক্ষমতা হারায়। তারপর অনেক কষ্টে টিউশন করে গ্রাজুয়েশন শেষ করে। এতদিন পর্যন্ত বাবার জমানো টাকাতেই অনেক কষ্টে ছোট দুই ভাই বোনের পড়াশুনা আর সংসারের খরচ চলেছে। আজ এক বছর হয় অদিতি অনেক জায়গায় চাকরীর ইন্টারভিউ দিয়েছে। ইন্টারভিউ ভাল হওয়া সত্তেও তার চাকরী হচ্ছে না। তার যে মামা কাকা নেই। আর ঘুষ দেওয়ার সামর্থ ও ইচ্ছা কোনটাই তার নেই। সংসার আর ছোট ভাই-বোনের পড়ার খরচ যোগন দেয়ার জন্য আর কয়েকটা টিউশন নিতে হয়েছে। ভাইয়ে মাধ্যমিক শেষ হওয়ার পর চেষ্টা করেও তাকে পড়াতে পারেনি অদিতি। তার এক কলেজ বন্ধুর কাপড় এর ব্যবসা আছে। অনেক কস্টে ভাইয়ের জন্য একাটা কাজের ব্যবস্থা করেছে ওখানে। যা পায় তা দিয়ে ওর খরচটা ও চালাতে পারে। একদিন অদিতি টিউশন করাচ্ছে এমন সময় ছোট বোনের ফোন পায়। ছোট বোন কাঁদতে কাঁদতে জানায় বাবার শরীর খুব খারাপ। মা আর ভাইয়া বাবাকে হসপিটালে নিয়ে গেছে। অদিতি তখনি হসপিটালে ছুটে যায়। সে জানতে পারে বাবাকে টাকা জমা করা ছাড়া ভর্তি নিচ্ছেনা। অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে বাবাকে ভর্তি করায়। কিন্তু ওষুধ, বিভিন্ন টেষ্ট আর হাসপাতালের বিল শোধ হবে কিভাবে? অনেক চিন্তা ভাবনার পর সে একটা কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় অদিতি। এ ছাড়া আর কোন উপায় নেই তার। একটা কিডনি নিয়েই আজও অদিতি একের পর এক টিউশনি করে চলে। হাজারও অদিতির সাথে চাকরির জন্য ইন্টারভিউর যুদ্ধে অবর্তীণ হয়। এভাবেই চলতে থাকে তার সংগ্রাম সে জানেনা এর শেষ কোথায়। কবে শেষ হবে এই জীবন যুদ্ধ। তবু অপেক্ষায় থাকে চাকরী নামের সেই সোনার হরিণ এর যদি কখনো এসে তার হাতে ধরা দেয়।।।।।।
০ Comments