গল্প লেখকঃ
Shopno Balika
(মার্চ – ২০১৮)
…………
যেদিন আমি জানতে পেরেছি আমার মেয়ে পাঁচ বছর যাবৎ একটি ছেলের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে আছে, সেদিন খুব অবাক হয়েছি। অনেক কষ্ট করে মেয়েটার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার সন্তানেরা আমাকে বেশ ভয় পেত তাই আমাকে জানায় নি। আমি ভাবতাম ওরা ভয় পায় না বরং আমাকে ঘৃনা করে আমার পেশার কারণে ।
একদিন সেই ছেলেকে ও তার পরিবারকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য বলেছিলাম। সাধ্য অনুযায়ী আমাদের ঘর সাজালাম এবং তাদের জন্য ভালো খাবারের আয়োজন করলাম । আমার মেয়ের বিয়ের জন্য বিশ বছর ধরেই অল্প অল্প করে টাকা সংরক্ষণ করেছি। সেই দিন আমার মেয়ে অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক সুখী ছিল। কথোপকথনের শুরুতেই তারা দাবি করে কিছু টাকা পয়সার। তাছাড়া তাদের কিছু ছোটমোট শর্তও আছে। শর্ত গুলো হলো:
১. বিয়ের সময় আমি যেন মেয়ের বাবা হিসেবে পরিচয় না দেই। আমাকে তারা তাদের আত্মীয়দের সামনে পরিচয় করিয়ে দিতে চায় না।
২. আমি যেন বিয়ের পর মেয়েকে দেখতে তার শ্বশুরবাড়ি না আসি।
আমি কিছু বলার আগ মুহূর্তে আমার মেয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। চোখ দিয়ে যেন তার অশ্রু ঝরছে সাথে ঘৃণা।
সে উচ্চ কন্ঠ করে বলা শুরু করলো, “আমার বাবা এমন কাজ করেন যা কেউ করতে পারে না। সবাই নোংরা করতে পারে কিন্তু পরিষ্কার করতে পারেন না। আর আমি সে বিষয়ে গর্বিত। আপনারা আমার ঘর থেকে এক মিনিটের মধ্যে বের হয়ে যান।”
সেই দিন আরও অবাক হই। মেয়েটা পাঁচ বছরের সম্পর্ক মুহুর্তে শেষ করে দিলো।
সেই দিন থেকে আমি জানলাম আমার ছেলেমেয়েরা আমাকে ঘৃণা করে না। আমি গর্বিত আমি ময়লা পরিস্কার করলেও আমার ছেলে মেয়েদের মন অনেক পরিস্কার।
০ Comments