ফেরদৌস আহাদি
লাশ!
পার্ট__(১)
পরে আছে কেউ ধরছে না। চেহারাটা কত মুনমুগ্ধকর। কত সুদর্শন, কত মায়া রয়ে আছে চেহারাটায়।
– বয়স বেশি হবে না ২৩-২৫। শরীরের রক্তের গরমে এখনো পুরটা শরীর নরছে।
– চারপাশের মানুষ চেয়ে চেয়ে দেখছেন। এখনো পোষ্টমর্টেম করা হয় নাই। বুঝা যায় নাই কিসের জন্য তার মৃত্যু।
– বডিটা দেখে মনে হচ্ছে কোন ধনী ফ্যামিলির হবে। নানান জনে নানান মন্তব্য করছেন। চোখ দুটু এখনো কথা বলছে, মনে হচ্ছে।
ছেলেটার শরীরে কোন রক্তের দাগ নেই। নেই কোন আঘাতের দাগ। দেহে কোন চিন্তার দাগও দেখা যাচ্ছে না। তাহলে, এখনো তো কোন ফ্যামিলি মেম্বার আসে নাই কোন খবর নেওয়ার জন্য।
– দু’ দিন তো পার হয়ে গেলো কিভাবে রাখা যায় আর। এখন তো তার বডি গন্ধ ছড়াবে চারপাশে। পোষ্টমর্টেমও তো করা যাচ্ছে না। ফাইল তো খুলা হয়ে পরে আছে কোন লেখা উঠছে না। উঠেই বা কি হবে ফ্যামিলির স্বাক্ষর ছাড়া কি আর পোষ্টমর্টেম করা যায়। এভাবে তো আর থাকে রাখা সম্ভব না।
– এখন সময় যাবে আর তার দেহ ভয়ংঙ্কর হয়ে আসতে থাকবে।
– After a long time,
থাকে তো অনেক পরীক্ষা করা হয়েছে কিন্তু কোন সমস্যা তো ধরা পরছে না। মনে হচ্ছে শরীরের সকল যন্ত্রগুলো এখনো সঠিক ভাবে নির্বাদায় চলতেছে। মনে হচ্ছে জ্যান্ত একটা লোকের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
– এ জীবনে তো অনেক রোগি দেখলাম কিন্তু এমন না। এটা অনেক ডিপ্রেন্ট। এটার তো কোথায় কোন মিল পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো এটাকে লাশ বলাটা অনেক কনফিউজড লাগছে।
– তিন দিনের মাথায়ও কোন হদিস মিলছে না। কেউ কোন খুজ নিতে আসছে না। নিউজ পোর্টাল করলেও তো অনেক ঝামেলা। অনেক বাধার সম্মূখীন হতে হবে। হাজার লোকের হাজার প্রশ্নের এন্সার দিতে হবে। আরও কত কি?
এরই মধ্যে তিনদিন প্রায় শেষের দিকে। কেউতো আসেনি। এদিকে আবার একটা লাশ এক থেকে দেড় দিন থাকলেই গন্ধ চড়ায়। আমরা লাশের কাছে যেতে পারি না।
– কিন্তু এটা এখনো মনে হচ্ছে, সেই আগের মতই রয়ে গেছে। দেহের কোন পরিবর্তন আসছে না। ব্যাপারটা কেমন যেনো শুধু বিগরে তুলছে। একটা লাশ দুই থেকে তিনদিন রাখতে গেলেই কত মেডিসিন ব্যবহার করতে হয়।
– কিন্তু মনে হচ্ছে তার শরীর থেকে এখনো সুগন্ধি বাহির হচ্ছে। এতো সুন্দর একটা মানুষ কি হতে পারে তার?
– এদিকে তিনদিন যায় যায় রাত এসে গেছে। পুরো দেহ আবার নতুন করে পরীক্ষা করা হয়তেছে কোন সমস্যা ধরা যায় কি না। কিন্তু এখনও ব্যর্থ।
– পোষ্টম্যানকে খবর দেওয়া হলো। এবং শহরের সেরা পোষ্টম্যানকে আনা হলো তার পোষ্টমর্টেম করার জন্য।
– রাত প্রায় বারোটা সকল পোষ্টম্যান তাদের ড্রেস শরীরে পরন শুরু করে একের পর এক সবাই তৈরি হয়ে আসে।
– প্রথমে তার বুকের মধ্যে যখন আঘাত হানে তখন অন্য লাশের তো অনেক রক্ত বাহির হতো। কিন্তু এটাতো অবাক করা কান্ড। এটার তো তেমন কোন ব্লাড বাহির হচ্ছে না। ব্যাপার কি?
– দেহের প্রত্যক অঙ্গ মনে হচ্ছে এখনো সচল অবস্তায় আছে। কোন অঙ্গে কোন আঘাত নেই। সবগুলো নির্ভেজাল। মনে হচ্ছে জীবিত একটা দেহ পোষ্টমর্টেম করা হচ্ছে।
একটা দেহের পোষ্টমর্টেম করতে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা সময় লাগে কিন্তু এটা প্রায় পাঁচ ঘন্টা লাগলো। জীবনে তো অনেক পোষ্টমর্টেম করা হয়েছে। কিন্তু এত সময় কোন পোষ্টমর্টেমে দেওয়া হয় নি।
– পোষ্টমর্টেমের সকল রিপোর্ট তৈরি করা শেষ। এখন থাকে ডেড রুমে নেওয়া হবে। কিন্তু না থাকে ডেড রুমে রাখা হয়নি। আরও কিছুদিন তারা থাকে নর্মালি ভাবে নানান মেডিসিন ব্যবহার করে থাকে রাখার চেষ্টা করতে থাকে।
পার্ট__(২)
থাকে এভাবে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস রাখা হলো। লাশটি হিন্দু না মুসলিম তা জানে যখন পোষ্টমর্টেম করা হয়। ছেলেটি মুসলিম। পোষ্টমর্টেমের কিছুদিন পর তারা ভাবে। লাশটাকে কবর দেওয়া দরকার। কিন্তু কয়েক জন একমত আর কয়েকজন দ্বিমত। তাই শেষ পযন্ত আর কবর দেওয়া হলো না।
– তারা একটা প্লান তৈরি করে। এবং সেই প্লান যে এতো দূর পৌঁছাবে তা তারা জানতো না। কোন পরিচয় না মিলাতে তারা পোষ্টমর্টেমের আগেই ছেলেটিকে একটা ছবি তোলে রাখে। এবং এডিটিংয়ের মাধ্যমে থাকে জীবিত মানুষের মত তৈরি করে রাখা হয়। যাতে সে যে মরেরে গেছে কেউ না বুঝতে পারে।
– এই হাসপাতালে যত প্রেসেন্ট যত ভালো মানুষ আসে সবাইকে এই ছবিটি দেখায় এবং গোপনে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু কেহ তাহা স্বীক্ষার করে না। কেহ চিনে না।
– এভাবে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস যেতে থাকে কেহ বলে না যে ছেলেটিকে চিনে। এরি মধ্যে তারা দেশের প্রত্যক হাসপাতালে তার ছবি দিয়ে দেওয়া হয়।
– যদি ফ্যামিলির এরা হাসপাতালে খুজ করতে আসে। কিন্তু না সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। কোথাও তার কোন হদিস মিলছে না। থাকে আর কতদিন রাখা যায়। মেডিসিন ব্যবহার করতে করতে তো তার হাড় গুলাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর কিছুদিনের মধ্যে তো বালুর মধ্যে এক ফোটা পানি পড়ার মতো দেহটা বায়ুতে মিশে যাবে।
– তারপর
– আরও কিছুদিন চলে গেলো। তারপর একটা হদিস পাওয়া গেলো।
– ঐদিন ছিল শুক্রবার। নতুন একটা প্রেসেন্ট আসে। সবাই প্রেসেন্ট দেখে তো অভাক সকল স্টাফ এক হয়ে পরে। এবং থাকে দেখকে থাকে। একজন দৌঁড়ে গিয়ে সেই লাশটা দেখে আসে। না লাশতো লাশের স্থানেই আছে।
– তাহলে,
– তাহলে এবার আমরা মূল জায়গায় পৌঁছাতে সক্ষম হতে পারবো। সবাই ভাবছে নিশ্চয় তারা জমজ ভাই। কিন্তু থাকে তারা তা বুঝার কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি। তার কাছে সবাই নর্মাল হয়ে আছে।
– একজন তার নিরিবিলি ট্রিটমেন্ট নিতে থাকে। তার সব ফ্যামিলি ডিটেইলস নিতে থাকে। কিন্তু তার কি হয়, কোন কিছু মিলছে না তো। তাহলে কি এবারও ব্যর্থ। কিন্তু না এবার ব্যর্থ না, এবার অবশ্যই সফল হবে তারা।
– থাকে সব কিছু জিজ্ঞাসা করার পর একটু জানা যায় তার মতই চেহারা তার একটা বন্ধু ছিল। তার কেহ ছিল না। তার শুধু মা ছিল। কিন্তু এখন অনেক মাস যাবৎ তার কাছে নাই। তার ফ্যামিলি বলতে কেউ ছিল না। এ পৃথিবীতে সে একা। যাও তার দুঃখীনি মা বেঁচে ছিল, সে আমার কাছে থেকে চলে আসার কিছুদিন পূর্বেই শুনলাম মারা যায়।
– শেষ পর্যায়ে সব তথ্য জানার পর থাকে, তার ছবিটা দেখানো হয়। এবং থাকে তার ডেড বডিটাও দেখানো হয়।
– থাকে দেখেই সে কেঁদে দেয়। আর সবাই তার সাথে কাঁদতে থাকে।
– সকলে ভাবছে, এবার হয়তো থাকে কবর দেওয়ার মত কাউকে পাওয়া গেল।
ভালো লিখছেন।
ভালে লিখছেন।
প্রথম দিকে পড়তে পড়তে শেষে একটা থ্রিল আশা করেছিলাম। কিন্তু শুরুটা যেরকম ছিলো, শেষটায় এসে আশাহত হয়েছি। আর বেশ কয়েকটি বানান ভুলও লক্ষ করেছি।
প্লটটা ভালো ছিল। কিন্তু গল্পটার উপস্থাপন ভালো হয়নি।
পুরটা — পুরোটা
বাহির — বের
— এখনো পোষ্টমর্টেম করা হয় নাই। বুঝা যায় নাই কিসের জন্য তার মৃত্যু।
উপরোক্ত বাক্য দুটিতে হয়নি ও বুঝেনি ব্যবহার করতে হবে। কারণ, ‘নাই’ সাধু ভাষার শব্দ।
তাছাড়া দু’জায়গায় আপনি ‘তাকে’ এর জায়গা ‘থাকে’ ব্যবহার করেছেন।
‘পোষ্টম্যানকে খবর দেওয়া হলো।’
— পোস্টম্যান মানে হলো পিয়ন। আপনি ময়নাতদন্তকারী হিসেবে এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এটা একেবারেই ভুল। আপনি এখানে ‘প্যাথোলোজিস্ট’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারতেন।