আমাদের গল্প
মাহবুবা শাওলীন স্বপ্নীল
শেষ চুমুকে চায়ের কাপ খালি করেই বের হলাম। বিকেলের এই সময়টায় চা কেমন নেশার মতো হয়ে গেছে! আড্ডা কাজ কিংবা ব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়ে টুপ করে সময় বের করে নিই। দিনের শেষে চা হাতে চেনা শহরের কোলাহল ঘন্টার পর ঘন্টা দেখে গেলেও ক্লান্তি ছোঁবে না। বরং সব অবসাদ ছুুঁড়ে ফেলে দেয়া যায় এক নিমিষেই!
হাঁটা শুরু করলাম গন্তব্যে। ইদানিং বেশ গরম পড়ছে। দিনের বেলা থাকা দায়। রাতে হাঁটতে কিছুটা স্বস্তি। দু’সপ্তাহ আগেও শীতের প্রকোপে দাঁতে দাঁত চেপে যেত। কথা বললেই মুখ দিয়ে গড়গড় করে ধোঁয়া বের হতো। এই ব্যাপারটা নিয়ে সোমা কেমন রসিকতা করতো! সোমা আমার স্টুডেন্ট। ওকে পড়াতাম ওদের বাসায় গিয়ে। ও তখন ফাস্ট ইয়ারে। শহীদ ভাই একদিন হুট করে হলে চলে আসলো। পাড়ার বড় ভাই। জোর করে বসলো তার কাজিনটাকে একটু দেখিয়ে দিয়ে আসতে। আমার পকেট তখন পুরাদস্তুর ফাঁকা। মাসশেষে হাতখরচের জন্য বাবার দিকে চেয়ে থাকতে অস্বস্তি লাগতো। তাই একটু দূরে হলেও টিউশনের সুযোগটা ছাড়লামনা। তিনবছর পড়িয়েছি। তিনবছরে আমি সোমাকে যতটুকু শেখাতে পেরেছি, তার চেয়ে বেশি সোমা আমায় শিখিয়েছে।
সেই সন্ধ্যেটার কথা মনে পড়ে। মোটা ফ্রেমের চশমার ভেতরে গোল গোল বড় চোখ দু’টো! প্রথমবার কোনো মেয়ের চোখে আয়না ধরেই ধাক্কা খেলাম। স্নিগ্ধ চেহারা অথচ কি দারুণ চঞ্চলতা! পরীর মতো একটা মেয়ে আমার সামনে বসে তাকিয়ে আছে।
“তোমার নাম সোমা?”
“আমার নাম সোনিয়া ইমরোজ মারিয়া। সোনিয়ার ‘সো’ আর মারিয়ার ‘মা’ মিলিয়ে সোমা। এই নামটা আমার দেয়া। আর এটা কেবল আপনার জন্য।”
“আমার জন্য মানে?”
“আপনি আমায় এই নামে ডাকবেন। শহীদ ভাইকে আমিই বলেছি আপনাকে এই নাম বলতে। ইচ্ছে করলে ইমাও ডাকতে পারেন। ইমরোজ এর ‘ই’, মারিয়ার ‘মা’। কোন নামে ডাকবেন?”
“সোমা বলবো। ইমা তে কেমন ‘ই মা!’ লাগে!”
“থ্যাংক ইয়্যু। আর একটা কথা, আমি আপনাকে স্যার বলবোনা, সাদাত ভাই বলবো।”
“তুমি আমার ডাকনাম জানো কি করে?”
“আমি আপনার সব জানি। ক্যাম্পাসে সবসময় দেখতাম চাদর গায়ে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে বই পড়তেন। কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে রাখা ছেলেদের কবি কবি লাগে। আপনাকে লাগতো বোকা বোকা। ঝোলানো ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আপনার সেই কঠিন মনোযোগে বই পড়া দেখে বান্ধবীরা হেসে ফেলতো। কঠিন মনোযোগের কারণে সেই রসিকতা আপনার চোখে পড়েনি।”
সেদিন সোমার কথায় খানিকটা চমকে গেছিলাম। এরপর থেকে কোনো এক বিচিত্র কারণে তিনবছরে যতদিন ওর সাথে দেখা হতো, ততদিন-ই কোনো না কোনোভাবে সোমা চমকাতো আমায়। মানুষকে চমকাতে পারার ক্ষমতা সবার থাকেনা। সোমার ছিল। হুট করে কারোর বিস্ময় জাগিয়ে ফের হুট করে স্বাভাবিক করে ফেলার অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে মেয়েটা।
সে শীতে আমি খুব জ্বরে পড়লাম। জ্বরের ঘোরে পড়ে আছি দুইদিন। মা বাবাকে জানানোর সিচ্যুয়েশন ছিল না। হলে রুমমেট রা সবাই হই হুল্লোড় করে রাঙ্গামাটি ট্যুরে গিয়েছিল। টানা দু’দিন হুঁশ ছিলনা। হুঁশ ফেরার পর ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম ৪৭ টা মিসড কল! বিস্ময় নিয়ে ক্ষুধার্ত অবস্থায় দুর্বল শরীরে উঠে পানি খাওয়ার শক্তিটুকু ছিল না। কোনোরকম নড়েচড়ে পাশ ফিরতেই চমকালাম। প্রস্তুত ছিলাম না একদম। পানির গ্লাস হাতে সোমা দাঁড়িয়ে। জ্বরের ঘোরে হোক, ঠান্ডা মস্তিষ্কে হোক, সেদিন ওর হাতটা শক্ত করে ধরার তীব্র ইচ্ছা জেগেছিল।
“গত দু’দিন পড়াতে আসলেন না! মায়ের নাম্বার থেকে কতবার কল দিলাম আপনাকে! রেসপন্স নেই। শহীদ ভাই এর কাছে কল করেও খবর পেলাম না। আমার এক দূর-সম্পর্কের আত্মীয় ছাত্রলীগ নেতা, উনার মাধ্যমে হলে ঢুকার ব্যবস্থা করলাম আজ সকালে। এসে দেখি চিৎ হয়ে হা করে শুয়ে আছেন! জলপট্টি দিলাম, তাও হুঁশ নেই। হুঁশ এলো এখন! এই ঠান্ডায় রাতে আরো গিয়ে বাইরে বসে থাকেন।”
চোখমুখ শক্ত করে কথাগুলো বলে যাচ্ছিল সোমা। অথচ প্রাণপণে চেষ্টা করেও চোখের পানি আটকাতে পারেনি। সবসময়কার চেনা সেই শক্তপোক্ত কঠিন মেয়ের টুপ করে গলে যাওয়া ভেতরের রূপটা কী ভীষণ অচেনা ছিল! সেদিন প্রথমবার সোমাকে কাঁদতে দেখি। প্রথমবার নতুন করে আবিষ্কার করি। দারুণ অসাধারণত্ব থাকা সত্ত্বেও খুব বেশি সাধারণ হয়ে থাকা এই মেয়ের ভেতরটা না দেখলে কখনো বুঝতাম না ওর ভেতর একটা চমৎকার মেয়ে বাস করে।
“রুমের কি বেহাল করে রেখেছেন! হলে থাকা মানুষজন সবসময় এমন করে থাকে নাকি?” কথাটা বলে চোখের পানি আড়াল করে রুম গোছানোতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো সোমা! ভেতরে কষ্টে মরে যাবে, তবু সামনে বুঝতে দেবেনা কাউকে। স্রষ্টা তার মায়ার ভাণ্ডারের একটা বিশেষ অংশ দিয়ে তৈরী করেছেন এই মেয়েকে। খুব করে চেয়েও কোনো কথা বলতে পারিনি সেদিন। শুধু বুঝতে পেরেছিলাম বুকের বাঁ পাশে থাকা হৃদপিণ্ডের কোথাও কিছু ঠিক নেই! কোথাও একটা সুখ সংকেত বেজে উঠেছে! অল্প ক’টা দিনেই জ্বর সেরে গিয়েছিলো। রোজ রোজ এসে কেউ একজন সারিয়ে দিয়েছিল অঘোষিত সম্পর্কের যত্নে!
সুস্থ হওয়ার পর নিয়মিত সোমাকে পড়াতে যেতাম। এরপর কখনো আমাদের ভেতরে চলতে থাকা আকুলতা কেউ কাউকে খুব বেশি বোঝাতে দিতাম না। সোমা ইয়ার ফাইনালের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। আমিও সর্বোচ্চ দিয়ে নিজের স্বল্প জ্ঞানটুকু ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। সেদিন ছিল রবিবার। বাবা মা’র ওষুধ কিনে পাঠাতে গিয়ে খানিকটা দেরি করে ফেলেছিলাম। সোমার পরীক্ষা আসন্ন। তাড়াহুড়ো করে পৌঁছালাম। সে সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বারের মতো সোমাকে ভিন্নভাবে আবিষ্কার করি। চোখমুখ ফুলে থাকা বিধ্বস্ত চেহারায় চুপচাপ বসে থাকা সোমাকে দেখে ভীষণ অপরিচিত লাগছিল। আমার ভেতরে শুরু হয়ে যাওয়া ঝড়কে প্রশ্রয় না দিয়ে জিজ্ঞেস করি, “সব ঠিক আছে সোমা?”
“হুঁ”
“স্বাভাবিক দেখাচ্ছেনা তোমাকে। অসুস্থ?”
“উঁহু”
“তুমি কেঁদেছো সোমা। তোমার কাজল লেপ্টে চোখের নিচটা কালো হয়ে আছে। কোনো সমস্যা হলে বলো আমাকে। দ্বিধায় থেকো না।”
“সমস্যা নেই”
জবাবে শুধু এটুকু বলে সোমা এড়িয়ে গিয়েছিল। এরপর বেশ কিছুদিন লেগেছিল সোমা স্বাভাবিক হতে। কিন্তু কখনো সেদিনের ব্যাপার বুঝতে দেয়নি। তাই সেদিনের প্রসঙ্গ আমিও তুলিনি আর। কিছু কিছু সময় নীরবতা কেবল কথা বলতে না পারার অক্ষমতাকে বোঝায় না, নীরবতা প্রয়োজন হয় বলে আমরা নীরব থাকি। প্রয়োজন জিতে যায় আমাদের কৌতুহলের কাছে। হয়তো আমরাই কৌতুহল চেপে রেখে প্রয়োজনকে জিতিয়ে দেই প্রিয়জনের জন্য। আমরাই চাই প্রিয়জন ভালো থাকুক নিজের মতো করে। প্রিয় মুখ ভুলে থাকুক অপ্রিয় সময়।
আমি এখন পদ্মার পাড়ে দাঁড়িয়ে। জায়গাটা জনমানবহীন। দু’পাশে সারি সারি গাছ। সামনে সবুজের কোল ঘেঁষে পদ্মার বিস্তৃত জলরাশি খেলে যাচ্ছে আপন নিয়মে। এখানে আগেও একবার এসেছিলাম। তখন সময় ছিল গোধূলী। সবুজ শাড়িতে সোমা আর প্রকৃতির পার্থক্য ধরতে যে কেউ দ্বিধায় পড়ে যেত। সেই স্নিগ্ধ মুখ, চঞ্চল চাহনি, গোলগোল চোখজোড়ায় ডুব দিয়ে তলিয়ে যেত যে কেউ। সেদিন প্রথমবার সাহস করে বলেছিলাম,
“সোমা, তুমি কি জানো লাল টিপে তোমায় অসম্ভব সুন্দর লাগে?”
“জানবো কি করে! কেউ বলেছিল কখনো?”
“মনের ভাষা তো তুমি পড়তে পারো। বুঝে নিতে দোষ কী?”
“খুব সহজ কথা সহজ করে বলে দিতেও দ্বিধা থাকা বুঝি দোষের নয়?”
“দুর্বোধ্য মানবী”
“মানবী বৈকি! তাইতো রোবট শ্রেণীর কাউকে মানুষ করতে নেমেছি। ই রে! ঘামে পুরো ভিজে গেছেন দেখছি। হেঁটে আসার দরকার কি ছিল? রিকশা ভাড়াও নেই বুঝি! রাতে পাঞ্জাবিটা তো কষ্ট করে আপনাকেই ধুতে হবে।” — বলেই ফিক করে হেসে দিল।
আমি বুঝতে না পারার মতো করে তাকিয়ে ছিলাম। মাঝেমাঝে আমরা নিজেকে বোকা হিসেবে প্রকাশ করি। কারণ বিপরীত পাশের মানুষটা আমাদের বোকা দেখতে চাচ্ছে। আমি বোকা সেজেই জবাব দিলাম,
“আগে রোবট থেকে মানুষ হই!”
আমার জবাবে সোমা কেবল একটু হাসলো। হাতের তর্জনিতে পশ্চিমাকাশে রক্তিম সূর্যটার অস্ত যাওয়া দেখিয়ে দিল। একসাথে সূর্য দেখার সেই মুহূর্ত অক্ষত হয়ে আছে আমার হৃদয়ে। অক্ষত হয়ে থাকবে।
এখন রাত প্রায় ন’টা। আমি ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে এলাম সোমার কণ্ঠে। এই মুহূর্তে আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটাকে খুব বলতে ইচ্ছে করছে, “সবুজ শাড়িতে তোমার ওই লাল টিপ সেদিন আমার বুকে যে কাঁটা হয়ে বিঁধেছিল, সেই কাঁটা আমার প্রেমহীন হৃদয়ে বারবার প্রেমের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত করে যাচ্ছে। আমায় উদ্ধার করো!”
বলতে ইচ্ছে করলেও বলতে পারছিনা৷ বিশ্বাস হচ্ছেনা এই মেয়েটাই কিছুক্ষণ আগে আমায় ফোন করে বলেছিল,
“সাদাত ভাই, আমার বিয়ে ঠিক, একটু পর বরযাত্রী আসবে, আপনাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবোনা আমি, এটা নিশ্চয় জানেন আপনি! আমাকে বিয়ে করতে আপনার আপত্তি আছে?”
“উঁহু”
“আপনি আধঘন্টার ভেতর ওই জায়গাটায় চলে আসুন, দেরি করবেন না।”
চারপাশে সবার এত তাড়া তাও আমাদের পৃথিবীটা কেমন স্থির হয়ে গেছে! কিছুক্ষন কেউ-ই কোনো কথা বলতে পারিনি। কনের সাজে সোমাকে ঠিক একটা পুতুল লাগছে। নীরবতা ভাঙলো সোমা। হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, এই চিরকুট টা পড়ুন।
“সাদাত ভাই, কিছু কথা বলা জরুরী। ভীষণ জরুরী। মুখে বলতে চেষ্টা করেছি অনেকবার৷ ব্যর্থ হয়েছি বরাবরই। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল বাসায়। একজোড়া খুনী চোখ আমায় কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। আমার চাচাতো ভাই, মুহীব। একদিন বাবা মা আপনার সাথে যার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। সেই নরপিশাচটা সেদিন, সে সন্ধ্যায় বাসায় একা ছিলাম বলে, আমার উপর… আমার উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল। নিজের সবটুকু শক্তি দিয়ে চিৎকার করেও রেহাই পাইনি! খুন তো সেদিন-ই হয়ে গেছি আমি। এরপর কতবার সুইসাইড করতে চেয়েও পারিনি। আপনার মায়াবী চোখজোড়া চিৎকার করে বাঁচতে বলতো, ‘সোমা ফিরে আয়!’। মরতে পারিনি আমি। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর মায়া ছাড়তে দেয়নি আপনার প্রেমময়ী পরিচিত চেহারা! ভালোবাসি আপনাকে৷ ভীষণ ভালোবাসি৷ সব ছেড়েছুড়ে চলে এসেছি আমি। বাবা মা জানেনা, অাপনি ছাড়া কাউকে বলতে পারবোনা আমি।”
আমার ভেতরটা থমকে গেছে। সোমাকে বাসায় একা পেয়ে ক্ষুধা মেটাতে চেয়েছে পশুটা। খুব ঠান্ডা মাথায় একটা খুন করতে ইচ্ছে করছে। ঠান্ডা মাথায় মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে পিশাচটাকে। এর ব্যবস্থা আমি করবো। হায়েনার দলগুলো এভাবেই নিজেদের ক্ষুধা মিটিয়ে বেঁচে যাচ্ছে৷ আর ধুঁকে ধুঁকে মরে যাচ্ছে লালসার শিকার হওয়া নিষ্পাপ মেয়েগুলো! কোনোভাবেই রেহাই পেতে দেয়া যাবেনা এই বিকৃত মস্তিষ্কের পিশাচকে। আর কোনো মেয়ের সম্ভ্রম নষ্ট হতে দেবে না। এতদিন এই কষ্ট বুকে পাথর করে চেপে রেখেছে মেয়েটা!
“কেন সোমা? আমাকে এতদিন বলোনি কেন? কাছের ভাবতে পারোনি আমায়?”
সোমা জাপটে ধরলো আমায়। কোনো কথা বলছেনা। শুধু ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আমিও শক্ত করে জড়িয়ে নিজের করে নিলাম। এই মেয়েটা আমার! আর কখনো অশুভ কিছু ছুঁতে পারবেনা ওকে। আর কখনো কাঁদতে দেব না আমার মানবীকে। উহুঁ, সেরাতেও আমি বুকের সবটুকু প্রেম উজাড় করে বলতে পারিনি, “ভালোবাসি”। কেবল ওর দু’টো হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলেছি, “সোমা, আমি আছি। তোমার ভয় নেই। তুমি থেকো প্লীজ!”
সোমা আগের মতোই আমার বুকে মুখ গুঁজে রাখলো; একটা মেয়ের সবচেয়ে ভরসার জায়গা, সর্বোচ্চ আস্থার জায়গায়!
“সোমা, দেখো চাঁদটা! জ্যোৎস্না গিলে ফেলেছে পৃথিবীকে। এরকমই কোনো জ্যোৎস্নার রাতে তুমি আমি সমুদ্রস্নানে যাবো। আমার পাশে তুমি নীল শাড়িতে খোলা চুলে হাঁটবে। দু’জন রচনা করবো আমাদের গল্পের নতুন অধ্যায়।”
মুখ তুলে তাকালো সোমা। আমার চোখে চোখ রাখলো। ভরা জ্যোৎস্নায় দ্বিতীয়বারের মতো ওর চোখে কান্না দেখেছি। এ অশ্রু কষ্টের নয়, আনন্দ-অশ্রু!
“এই যে হেঁটে এলাম, ঘামে ভেজা পাঞ্জাবিটা তো কাল তোমাকেই ধুতে হবে, সে খেয়াল আছে?”
সোমা শুষ্ক ঠোঁট প্রসারিত করে খানিকটা হাসলো। আশ্চর্য! কান্নাচোখে হাসিতে সোমাকে দ্বিগুণ সুন্দর লাগছে!
আমরা হাঁটছি শহর থেকে দূরে, বহুদূরে একটা কাজী অফিসের দিকে। চারদিকে নীরব নিস্তব্ধ! শুধু মাঝেমধ্যে দু’একটা রাতপাখির ডাক শোনা যাচ্ছে, আর সাথে সোমার নিঃশ্বাসের শব্দ!
ছাড়লামনা-ছাড়লাম না
দেবেনা-দিবে না
হুঁ-হ্যাঁ
কৌতুহলের-কৌতূহলের
কৌতুহল-কৌতূহল
রিকশা-রিক্সা
মাঝেমাঝে -মাঝে মাঝে
বিঁধেছিল-বেঁধেছিল
পারছিনা-পারছি না
উঁহু(এটা কি ধরনের ভাষা আমি ঠিক বুঝতে উঠতে পারছি না)
ভেরর-ভিতর
কিছুক্ষন-কিছুক্ষণ
ঝাপিয়ে-ঝাঁপিয়ে
ছেড়েছুড়ে-ছেড়ে দিয়ে
মাঝেমধ্যে-মাঝে মধ্যে
না শব্দটা সব সময় আলেদা হয় আর নি শব্দ একসাথে, লেখিকা ম্যাডাম না শব্দটা প্রায় অনেক শব্দের সাথে এক করে ফেলেছে। গল্পটা ভালো ছিল, তবে ভুলের জন্য তেমন তৃপ্তি পেলাম না। তবে আপনার জন্য শুভ কামনা
গল্পটা বেশ স্বচ্ছ মনে হলো। আপনার লেখার হাত ভালো। কিন্তু কিছু বানান ভুল ছিল। যেমন
কৌতুহল না হয়ে কৌতূহল হবে। রিকশা বানানটা ভুল।
মাঝেমাঝে এখানে স্পেস হবে বোধহয়।
গল্পটা বেশ স্বচ্ছ মনে হলো। আপনার লেখার হাত ভালো। কিন্তু কিছু বানান ভুল ছিল। যেমন
কৌতুহল না হয়ে কৌতূহল হবে। রিকশা বানানটা ভুল।
মাঝেমাঝে এখানে স্পেস হবে বোধহয়। শুভকামনা
আসসালামু আলাইকুম। গল্প প্রসঙ্গে কিছু কথা :
গল্পটা মোটামুটি লেগেছে। এমন থিমের গল্প এর আগেও অনেক পড়েছি। ছাত্রীর সাথে প্রেম এই বিষয়গুলো ঠিক ভালো লাগে না আমার। গল্পে বেশ কিছু ভুল ছিল। ভুলগুলো না থাকলে আরও সুন্দর হতো। নিচে ভুলগুলো দেওয়া হলো :
আড্ডা কাজ কিংবা ব্যস্ততা – আড্ডা, কাজ কিংবা ব্যস্ততা
মাসশেষে – মাস শেষে
হাতখরচের – হাত খরচের
ছাড়লামনা – ছাড়লাম না
তিনবছর – তিন বছর
বলবোনা – বলবো না
চাদর – চাঁদর
ততদিন – ততোদিন
থাকেনা – থাকে না
রুমমেট রা – স্পেস হবে না
হই হুল্লোড় – হৈ হুল্লোড়
ছিলনা – ছিল না
দেবেনা – দেবে না
যাবেনা – যাবে না
হচ্ছেনা – হচ্ছে না
দেখাচ্ছেনা – দেখাচ্ছে না
পারছিনা – পারছি না
গোধূলী – গোধূলি
চোখজোড়ায় – চোখ জোড়ায়
রাতপাখির – রাত পাখির
কান্নাচোখে – কান্না চোখে
তাছাড়া কী / কি এর ব্যবহার ঠিক নেই। যেমন :
স্নিগ্ধ চেহারা অথচ কি দারুণ… – কী হবে
তুমি আমার ডাকনাম জানো কি করে – কী হবে
রুমের কি বেহাল করে রেখেছেন – কী হবে।
যাইহোক লেখনী খারাপ না। ভালো ছিল। আগামীর জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
চমৎকার লিখেছেন।
বর্ণনাভঙ্গি দারুণ ছিলো।
তবে বানানে ভুল আছে।
না শব্দটি মূল শব্দের আলাদা হবে।
নি মূল শব্দের সাথে হবে।
আপনি এরকম বানানে বেশি ভুল করছেন।
বানানের প্রতি যত্নশীল হবেন।
শুভ কামনা রইলো।
এগিয়ে যান।লেখার হাত ভালো।
আপনার লেখার হাত অনেক পাকা। কিন্তু মার্ক পাবেন না বানান ভুলের কারনে। বানান নিয়ে তো অনেকেই বলেছে। আমি গল্প নিয়ে বলি,
গল্পটা এক কথায় অসাধারণ একটা প্রেমের গল্প। তবে, খুব সিরিয়াস একটা বিষয়কে আপনি গুরুত্ব দেননি। সোমার রেপ হলো, কিন্তু সাদাত এটা জেনেও কোন রিয়্যাক্ট করল না। বিষয়টা কিন্তু মর্মাহত হওয়াতেই শেষ হয় না।
আপনি হয়ত প্রেম টা কেই গুরুত্ব দিয়েছেন, তাই রিয়াক্ট তা কে মঝখানে আনেন নি।
শুভকামনা