গল্পঃ অতিথি
writer : এইচ এম আকরামুল
“পশ্চিমা দেশগুলোতে যখন প্রচন্ড শীত তখন হাজার হাজার
মাইল পথ পাড়ি দিয়ে পাখিরা এদেশে আসে।তারা আমাদের অতিথি।
অতিথিপরায়ন জাতি হিসেবে আমাদের খ্যাতি সবচেয়ে বেশি।তাই
এসব পাখির নিরাপত্তা দেয়া আমাদের সবার কর্তব্য।অথচ নিরাপত্তা
দেয়ার পরিবর্তে আমরা তাদের ধ্বংস করছি।কেউবা জাল
পেতে পাখি ধরে তাদের বিক্রি করে দিচ্ছি, কেউবা শিকারের
দোহাই দিয়ে এদের হত্যা করছি।এজন্যই কি তারা আমাদের
দেশে আসে?দিনে দিনে অতিথি পাখি কমে যাচ্ছে।বিশ্বের
দরবারে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।”
টিভি বন্ধ করে দিল কমল।স্কুল বন্ধ।শীতকালীন ছুটি চলছে।
কমল ভেবেছিল এবার চুটিয়ে মজা করবে।কিন্তু কিসের কি।
বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে।তাই সে খেলতে যেতে পারছে না।
আবার টিভিতে এসব বিরক্তিকর কথাও শুনতে ইচ্ছা করছে না।
সো টিভি অফ।
কমলের মন খারাপ।অবশ্য কারণও আছে।গতকাল কমল খুব
রেগে ছিল।আব্বু এলেন রাগ ভাঙ্গাতে।
কমল।
কি?
কি হয়েছে?
কিছু হয়নি।
তাহলে মুখ ভার কেন?
এমনি।
এমনি কি কারও মুখ এমন হয়?
আমার হয়।
কেন মুখ ভার?
জানিনা।
বল কি চাও?
বাবার দিকে তাকাল কমল।
যা চাই দেবে?
এখন বাবা চাঁদ চাইলে তো আর আমি তোমাকে এনে দিতে
পারব না।
আমি চাঁদ চাইব না।
ঠিক আছে।আমার সাধ্যের মধ্যে হলে অবশ্যই দেব।
কমল একটু চিন্তা করে।
বল কি চাও?
বন্দুক।
বাবা-মা অবাক।বলে কি এই ছেলে?
বন্দুক দেবে?
বন্দুক দিয়ে কি করবে?
পাখি শিকার করব।
কিন্তু বাবা এটা ভাল না।
কমলের প্রচন্ড রাগ লাগে।তাহলে আমি ভাত খাব না।
বাবা-মা পরস্পরের দিকে হতাশ চোখে তাকান।কমলের জেদ
তাদের জানা আছে।যা চাই তা তাকে দিতেই হবে।না দেয়া
পর্যন্ত সে ভাত খাবে না, কান্নাকাটি করে পুরো ঘর মাথায়
তুলবে ।ভয়ানক অশান্তি হবে ঘরে।
ঠিক আছে।কিনে দেব।
কমল খুব খুশি।বাবা-মা হাফ ছেড়ে বাচলেন।
আজ এয়ারগান কিনতে যাওয়ার কথা।কিন্তু বাইরে প্রবল ব্রিষ্টি।
বন্দুক কিনতে যাওয়া সম্ভব নয়।
বজ্রের গর্জন শোনা যাচ্ছে।কালো মেঘেরা ছোটাছুটি
করছে।বিদ্যুতের ঝলকানি চারদিক আলোকিত করে তুলছে।
বৃষ্টির ঝম ঝম শব্দ শুনতে বেশ ভালোই লাগছে।
কমল পড়ার টেবিলে বসে পড়ল।ম্যাডাম এই ছুটিতে দুটো রচনা
শিখতে দিয়েছেন।“গরু” আর “বর্ষায় বাংলাদেশ” । শিখে ফেলা
দরকার।
কমল প্রথমেই “বর্ষায় বাংলাদেশ” খুলল। এখানে কবিগুরুর একটা
বিখ্যাত কবিতা আছে।
নীল নব ঘনে আষাঢ় গগণে তিল ঠাই আর নাহিরে
ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।
বাদলের ধারা ঝরে ঝর ঝর
আউশের ক্ষেত জলে ভর ভর
কালিমাখা মেঘে ওপারে আঁধার
ঘনিয়েছে দেখ চাহিরে
ওগো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।
হঠাৎ দমকা বাতাস এসে বইয়ের পাতা এলোমেলো করে দিল।
মনোযোগ নষ্ট হয়ে গেল।
বাইরে তাকাল কমল। একটা পাখি একাকী গাছের ডালে বসে
ভিজছে।কি পাখি এটা? কমল চিনতে পারল না।দেখে মনে হয়
এক প্রজাতির হাঁস। কিন্তু হাঁস এত বড়? তাও বসে আছে গাছের
ডালে। উঠল কিভাবে ওখানে?হাসতো উড়তে পারে না।
এই হাস।মজা করার জন্য ডাকল কমল।
অবাক হয়ে তাকাল পাখিটা।
চমকে উঠলে কেন?
এমনি।
বৃষ্টিতে ভিজছ যে?
মনের দুঃখে।
তোমার মনে বুঝি খুব দুঃখ?
হ্যা।
কিসের দুঃখ?
জানতে চেও না।
কেন?
বলতে আমার বুক ফেটে যাবে।
এবার কমলের অবাক হওয়ার পালা।একটা পাখি তার সাথে কথা বলছে
এতে সে যতটা না অবাক হয়েছে তার চেয়ে বেশী অবাক
হয়েছে হাসের মনে দুঃখ শুনে।সামান্য একটা হাঁস, তার মনে
আবার কিসের দুঃখ?
প্রসঙ্গ বদলাল কমল।তুমি আমার বন্ধু হবে? পাখিটকে জিজ্ঞেস
করল কমল।
এবার পাখিটা অবাক হয়ে তাকাল কমলের দিকে।
বন্ধু হবে?
হ্যা।
গাছে উঠলে কি করে?
কেন?
আমাদের দেশে হাঁস গাছে উঠতে পারে না।
আমিতো এদেশের পাখি নই।
মানে?
আমি এসেছি হাজার মাইল দূর থেকে।
মানে তুমি অতিথি পাখি?
হ্যা।
অন্যসময় হলে কমল পাখিটা ধরার চেষ্টা করত।আজ করল না।
এমনকি তার সে ইচ্ছাও হল না।তারা দুজন তো এখন বন্ধু।
তুমি উড়তে পার?
হ্যা।
তোমার পরিবার কোথায়?
প্লিজ জানতে চেও না।
কেন?
সে যে বড় দুঃখের কাহিনী।
কিরকম?
বলতে আমার বুক ফেটে যায়।
প্লিজ বল।
তোমার জাত ভাইরা ওদের মেরে ফেলেছে।
আমার জাত ভাই?
হ্যা।
কিভাবে?
আমি বলতে পারব না।
কেন?
বলতে আমার কষ্ট হয়।
প্লিজ বল।আমি না তোমার বন্ধু।
সেবার বহুদিন পর শীতে তোমাদের দেশে আসছিলাম।
সাথে ছিল আমার স্ত্রী-সন্তান।কিন্তু আসার পথে শিকারীর
গুলিতে মারা গেল আমাদের বাচ্চাটা।জীবন বাচাতে আমাদের
সেখান থেকে পালাতে হল।বাচ্চাটার মুখ শেষবারের মত
দেখতেও পারলাম না।অনেকক্ষণ উড়ে পরিশ্রান্ত হয়ে আমরা
যখন গাছের ডালে বসলাম কিছু দুষ্ট ছেলে পাথর ছুড়ে
ফেলে দিল আমার স্ত্রীকে।আমি ওর কাছে গেলাম।
ছেলেগুলো আমাকেও পাথর মারল।কিন্তু ব্যর্থ হল।আমি
উড়ে চললাম একাকী।
চুপ হয়ে গেল পাখিটা।কমল সান্ত্বনা দেয়ার জন্য কোন কথা
খুঁজে পেল না।
তখনও রিমঝিম বৃষ্টি পড়ছে।কমলের মনে হল এ যেন বৃষ্টি
নয়, পাখির কান্না।
ওঠ, কমল।
কমলের ঘুম ভেঙ্গে গেল।
কি?
বৃষ্টি থেমে গেছে।
তো?
বন্দুক কিনবে না?
না।
কেন?
আমি কাউকে নিঃসঙ্গ করতে চাই না।
মা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন কমলের দিকে।
উড়ে যায় বিষন্ন পাখি
আমি একা জেগে থাকি
অন্ধকারের গান,
ফুরায় না অভিমান,
আমরা তবু জেগে থাকি
উড়ে যায় বিষন্ন পাখি।
এই পোস্ট তো সামু তে পড়েছি আগে। কপি পোস্ট
লেখাটা প্রয়োজনের তুলনায় ছোট মনে হলো। প্রচণ্ড বানানটা এভাবে হবে। দাঁড়ি’র পর স্পেস দেওয়া হয়নি।
দেয়া-দেওয়া
দেয়ার-দেওয়ার
দোহাই-দোহায়
সো টিভি অফ-তাই টিভি বন্ধ(বাংলা গল্পের মাঝে ইংরেজি না ব্যবহার করা উত্তম)
‘ভাঙাতে’ এইভাবে হবে মনে হয়
ভাল-ভালো
চাই-চায়(অন্যের বেলা য় হয়)
বাচলেন-বাঁচলেন
ঝলকানি-ঝলখানি
হাস-হাঁস
হ্যা-হ্যাঁ
বেশী-বেশি
শুনে-শোনে
দেয়ার-দেওয়ার
কমল তাহলে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল, আমিও তো বলি পাখির সাথে মানুষ কথা বলে কীভাবে তাও অতিথি পাখি। যাইহোক গল্পটা অনেক ভালো ছিল আর শিক্ষণীয়, কমলের মত সবাই যদি বুঝত তাহলে আজ এইসব দেখতে হত না পাখি শিকার। কমল তো স্বপ্ন দেখেছে, সবাই তো আর স্বপ্ন দেখে না। অতিথি পাখি রক্ষার জন্য আমাদের নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে। আর বানান ভুলগুলো বলে দিলাম। তবে দাড়ির পর স্পেস দেওয়া উচিত ছিল, শুভ কামনা রইল।
আসসালামু আলাইকুম। গল্প প্রসঙ্গে কিছু কথা :
গল্পটা অনেক ছোট হয়ে গেছে। আর কিছুটা বড় হলে ভালো হতো। বানানেও বেশ ভুল। দাড়ির পর স্পেস ব্যবহার হয়নি। না শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বসে না। তাছাড়া কী/ কি এর ব্যবহার ঠিক নেই। অনেক কাঁচা হাতের লেখা মনে হয়েছে। লেখনী আরও ভালো হওয়া প্রয়োজন। চেষ্টা করলে নিশ্চয়ই ভালো হবে। শুভ কামনা।
চমৎকার লিখেছেন।
অন্যরকম একটা থিম।
প্রতিযোগিতার গল্প আরেকটু বড় করতে পারতেন।
বর্ণনাভঙ্গি বেশ ভালো।
তবে বানানে ভুল।
বানানের প্রতি যত্নশীল হবেন।আর এগিয়ে যান।
লেখার হাত ভালো।
গল্পে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার না করাই ভালো।
শুভ কামনা রইলো।