নওমিতা সুপ্তি
এক গ্রামে বাস করত দয়ালু জমিদার, তার ছেলে অহংকারী রবীন্দ্র আর গরীব প্রজা প্রবাল।
জমিদার বাবু বড়ই ভালো মানুষ।গ্রামের সকলকে তিনি দুহাতে দান করেন।তাদের বিপদে-আপদে পাশে দাড়ান।তার প্রশংসা গ্রামের সবার মুখেই ছিল। তিনি কখনো ধনী-গরিবের পার্থক্য খুঁজেন নি।
তার একটি বিশ্বাসী লোক ছিল।তার নাম প্রবাল কুমার।
খুবই দরিদ্র ঘরের ছেলে।কিন্তু সে বুদ্ধিমান ছিল।তাই জমিদার বাবু তার
বিশাল বাড়িতে সেই দরিদ্র প্রজা প্রবালকে ভরসা করে সব কাজের ভার দিয়েছিল।
জমিদারের একটি ছেলে ছিল।সে ছিল ভারি অহংকারী।প্রজা প্রবলকে সে সহ্য করতে পারতো না।সবসময় ভুল ধরার চেষ্টা করত।তার ইচ্ছা ছিল এ রাজ্যের জমিদার সে হবে।কিনতু তার বাবা জমিদার তাকে এখনো সেই পদ দেননি।
মানুষকে কখনো মানুষ ভাবতো না।
নাম ছিল রবীন্দ্র। জমিদারের বড় আদরের ছেলে।
গ্রামের গরিব লোকদের যখন তখন অত্যাচার করত।কিনতু গ্রামের লোক ভয়ে জমিদারকে কিছু বলতো না।গ্রামের লোকদের থেকে খাজনা নিতো প্রতিমাসে মাসে।যদি কেউ না দিতে পারতো তাহলে প্রজাদের খুব অত্যাচার করত।
একদিন এক দরিদ্র কৃষক খাজনা দিতে পারে নি।তার মেয়ের বিয়ের জন্য।সে কথা শুনে রবীন্দ্র রেগে সেই কৃষকের বাড়ি,জমি সব কেড়ে নিয়েছিল। একশত বেতরাঘাত করেছিল। সেই কৃষক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সাথে সাথে মারা গিয়েছিল।
সেদিন কেউ বাঁচাতে আসেনি।কেউবা ফুপিঁয়ে কেঁদে ছিল।কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করেনি।বরং ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল।
আজ খাজনা নেওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে।তাই রবীন্দ্র তার দলবল নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
গ্রামের লোকজন ভয়ে ছিল।এ বুঝি এলো।
সত্যি সত্যি রবীন্দ্র হাজির। জোরে জোরে ঢাকঢোল পিটিয়ে গ্রামের সকলকে জড়ো করে নিল।তারপর এক এক করে সবার থেকে খাজনার টাকা আদায় করল।
এক দুখীনি ভিখারী মা খাজনার টাকা দিতে পারে নি বলে রবীন্দ্র তাকে একশত বেতরাঘাত করার অনুমতি দিল।
–প্রবল দূর থেকে সবটা দেখে সামনে এসে বলল,বাবু এ তো ঘোর অন্যায়! আপনার বাবা তো কখনো গ্রামের অসহায় মানুষদের উপর এরুপ অত্যাচার করেনি।তাহলে আপনি কেন করছেন??
–রবীন্দ্র রেগে বলল,সেই কৈয়ফত তোকে দিব?তুই আমাকে ভেদাভেদ শিখাতে এসেছিস ছোট লোক কোথাকার! আমাকে কিনা জ্ঞান দিতে এসেছে।
জানিস এর শাস্তি কত ভয়ানক হতে পারে?
–প্রবল বলল হুম জানি।তাইতো আপনাকে বাধা দিচ্ছি। শুনেন আপনারা বড়লোক হতে পারেন।তবে আপনাদের এ অধিকার দেওয়া হয়নি যে, অসহায় গরীবদের যখন তখন অত্যাচার করবেন।
–রবীন্দ্র ক্ষেপে বলল তোর এত বড় সাহস! আমাকে জ্ঞান দিচ্ছিস।দাড়া আজকেই আমি বাবাকে বলব।তারপর প্রবলকে টেনে হিঁচরে রবীন্দ্রের লোকেরা মহলে নিয়ে গেল।
–জমিদার বাবু তার সিংহাসনে বসে খাজনার ব্যাপারে আলাপ করছিল।হঠাৎ প্রবালকে এ অবস্থায় দেখে রাগে দাড়িয়ে গেল। চিৎকার করে বলল,কি হচ্ছে এখানে? তোমরা প্রবালকে কেন এখানে এনেছো?
–রবীন্দ্র এসে বাবাকে বলল প্রবাল ওর মুখে মুখে তর্ক করে।শুধু তাই নয় সব ব্যাপারে নাক গলায়।আমি চাই আপনি ওর বিচার করুন।ও বড্ড বেড়েছে।
–জমিদার বাবু বলল,বসো সবাই।আগে প্রবলের মুখে শুনব তারপর ব্যবস্থা করব।
প্রবল বলো কি এমন করেছ তুমি??
–প্রবল হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, বাবু আমি ইচ্ছা করে তর্ক করতে চাইনি। উনি আমাদের মতো অসহায় মানুষদের কাছ থেকে খাজনা নিচ্ছিল। শুধু তাই নয় তাদের অত্যাচার হিসেবে একশত বেতরাঘাত করার অনুমতি দিয়েছিল।তাই আমি প্রতিবাদ করি।যদি এতে আমার অন্যায় হয়? তাহলে যে শাস্তি দিবেন আমি মাথা পেতে নিবো।
–জমিদার বাবু আদেশ করলেন সেই দুখীনি মাকে এখানে আসার জন্য। সেনারা সেই অসহায় মাকে হাজির করল।
জমিদার বাবু বলল, প্রবল তুমি যা করেছ একদম ঠিক করেছ।আমি আমার সন্তান কে হয়ত ভুল শিক্ষা দিয়েছি।তাই ও মানুষকে মানুষ বলেনা। কিন্তু আমি এ মুহুর্তে অসহায় মাকে অনুরোধ করছি একশত বেতরাঘাত অামার ছেলেকে দেওয়ার জন্য।
–রবীন্দ্র রেগে বলল,বাবামশাই কাজটা ঠিক করছেন না কিন্তু।
–জমিদার নিজে সেই দুখীনির হাতে চাবুক দিয়ে বলল আজ আপনি এই অমানুষ টাকে মানুষ করুন।
দুখীনি মাকে চুপ থাকতে দেখে জমিদার নিজেই বেতরাঘাত করতে লাগল।ব্যাথায় ঘোঙাতে লাগল জমিদার রবীন্দ্র ।
–সেই মুহুর্তে দুখীনি মা কাঁদতে কাঁদতে বলল আজকের মতো এখানেই সমাপ্তি করুন।বাবু তো বুঝেনি তাইতো এরুপ করেছে। তবে আমার জন্য তাকে এভাবে মারবেন না।ছেড়ে দিন তাকে।মানুষ মাত্রই ভুল।একবার ভুল করেছে।তবে দ্বিতীয়বার দেখবেন করবেনা সে।
–বাবা মশাই রবীন্দ্র কে বলল দেখ কিছু শিখো।ওরা গরীব। কিনতু ওদের মনে মায়া আছে।ওরা তোমার মতো অহংকারী না।
জানো তো সবথেকে ধনী কারা? ধনী হলো তারা যারা গরীব হলেও মনটা অনেক বড়।মনে কোনো প্যাঁচ নেই।অহংকার নেই। তারা দিন আনে দিন খায়।এর মাঝেই তারা আনন্দ পায়।
আজকে তুমি যাকে মারার আদেশ দিয়েছিলে সেই মা ই তোমাকে বেতরাঘাত করতে নিষেধ করেছে।ভেবে দেখ এমন কোনদিন তোমার মাকেও কেউ এভাবেই বেতরাঘাত করে রক্তাক্ত করল।তখন তুমি কি পারবে সেটা চোখে দেখে সহ্য করতে??
–রবীন্দ্র চোখ মুছে বলছে, আজ আমার সত্যিই ভুল হয়ে গেছে।বাবামশাই আর মা আপনারা আমাকে ক্ষমা করবেন।
আসলে গরীব হলেও ওরা তো মানুষ।ওদেরও তো বাঁচার অধিকার আছে। আমি আরামে থেকে একটু অহংকারী হয়ে গিয়েছিলাম।তাইতো গরিব আর ধনীর মাঝে পার্থক্য করতাম।
আজকের পর থেকে বলব,” ধনী গরিব হলেও মোরা ভাই ভাই।”
এরপর থেকে রবীন্দ্র দামী পোশাক বাদ দিয়ে সাধারন পোশাক পরিধান করত।শুধু তাই নয় গ্রামের অসহায় মানুষদের পাশে দাড়াতো যে কোনো বিপদে আপদে।তার মনে এখন নেই কোনো হিংসা বা অহংকার।জমিদার বাবু একদিন খুশি হয়ে সব দায়িত্ব রবীন্দ্র কে দিয়েছিল। আর প্রবালকে সাধারন প্রজা নয় বন্ধু হিসেবে তার সাথে রেখেছিল।
গরীবকে আর অবহেলা নয়।হাতে হাত রেখে কাজ করা,একে অপরকে সাহায্য করা এটা আমাদের কর্তব্য।রাস্তার ভিখারী হলেও ওরা মানুষ। ওদের তিনবেলা পেট পুড়ে খাওয়ার অধিকার আছে।কিনতু আমরা বড়লোকেরা সে অধিকারটাও কেড়ে নিয়ে নিজেদের ভালো থাকাটা খুঁজে বেড়াই।নিজেদের ভালো থাকাটাতে কোনো সুখ নেই।অন্যের সুখই হচ্ছে বড় সুখ।
প্রথমেই যে অসঙ্গতিটা চোখে পড়ছে তা হলো, বিরামচিহ্নের পর “স্পেস” যত্নের সঙ্গে দেওয়া হয়নি।
.
জমিদার বাবুর কথা বলা হয়েছে, তিনি দু’হাতে দান “করেন”। বিপদে-আপদে পাশে “দাঁড়ান”। বোঝাই যাচ্ছে, এখানে “আপনি” সম্বোধনসূচক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। তাই-ই হবার ছিল। তবে প্রথম বাক্যের প্রথম অংশে কিন্তু একটি সমস্যা আছে, লেখা হয়েছে, ‘এক গ্রামে বাস “করত” দয়ালু জমিদার…’। ডাবল কোটেশনে রাখা শব্দ খেয়াল করুন, এখানে “করত” দ্বারা “আপনি” সম্বোধন বোঝায়নি। অর্থাৎ, একই প্যারায় একই ব্যক্তির প্রতি দুইরকম সম্বোধনসূচক শব্দের ব্যবহার, যা ব্যবহার-সঙ্গত নয়।
.
“তার প্রশংসা সবার মুখেই ছিল।” একথা নিশ্চয় জমিদার বাবু জানতেন। অতএব তিনি যখন জানতেন সবাই তার প্রশংসা করে বা সবাই তাকে ভালবাসে, তখন স্বাভাবিকভাবেই জমিদার বাবুর মনে এই ধারণা বদ্ধমূল হবার কথা যে, প্রজারা তার প্রতি বিশ্বস্ত। অথচ নীচে বলা হয়েছে, ‘তার “একটি” বিশ্বাসী লোক ছিল।’ যদিও সবাই তার বিশ্বাসী বা বিশ্বস্ত ছিল। আর এখানে আর একটা সমস্যা, “একটি” শব্দের ব্যবহার “লোকের” সংখ্যা বর্ণনা হিসেবে সঠিক হয়নি। “একজন লোক” হতে পারত। তবে যেহেতু প্রবালের পরিচয় আগেই দেওয়া হয়েছে, তাই ‘তার একটি বিশ্বাসী লোক ছিল। তার নাম প্রবাল কুমার।’ বাক্যদু’টি এভাবে না হওয়া প্রয়োজন ছিল। দু’টি বাক্যকে একত্রে এভাবে লেখা যায়, ‘প্রজা প্রবাল কুমার ছিলেন জমিদার বাবুর সবচেয়ে বিশ্বস্তদের একজন।’
.
মোহাসিনা বেগম আপুকে বলছি, এই লেখাটাতে এরকম বেশকিছু গুরুতর ভুল রয়েছে। আমি উদাহরণ হিসেবে এটুকুই তুলে ধরলাম। আশা করছি, লেখা নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী সম্পাদনায়ও অধিক যত্নবান হবেন।
.
অতঃপর এই মহৎ প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের সফলতা কামনা করি।
বাহ!
nice
দাড়ান-দাঁড়ান
খুঁজেন নি-খুঁজেননি
কিনতু-কিন্তু
পারে নি-পারেনি(নি সব সময় অন্য শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বসে)
দাড়া-দাঁড়া
দাড়িয়ে-দাঁড়িয়ে
মুহুর্তে-মুহূর্তে
দাড়াতো -দাঁড়াত
তবে গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। বেশ করে শেষের উক্তিগুলো , জানো তো সব থেকে ধনী কারা? ধনী হল তাঁরা
যারা গরীব হলেও মনটা অনেক বড়।
বেশ কিছু বানান ভুল অাছে, ছোট গল্পে এত ভুল চোখে লাগে। যেমন, দাড়া, দাড়িয়ে, দাড়াতো। দাঁড়ানোর সাথে সংশ্লিষ্ট শব্দ গুলোতে ঁ হবে।
এছাড়া বড় সমস্যা লাইন স্পেসিং যা একদমই ঠিক নাই। যতি চিহ্নের পরে কোথাও স্পেস দেওয়া হয় নাই।
গল্পের প্রথমেই তিনজন চরিত্রের কথা বলার পরও অালাদা করে একটি ছেলে, একটি বিশ্বস্ত লোক বলাটা দৃষ্টিকটু।
অাশা করি পরবর্তী গল্পে সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন।
গল্পের থিমটা ভালো ছিলো।আপনার লেখার হাতও ভালো।আমার কাছে গল্পটা অনেক ভালো লেগেছে।আপনার জন্যে শুভকামনা♥
বানান ভুল লেখার সৌন্দর্য নষ্ট করেছে
প্লটটা খারাপ ছিল না। কিন্তু বেশ কয়েক জায়গায় বানান ভুল হয়েছে। তাছারড়া বিরামচিহ্নের পর স্পেস ব্যবহার করা হয়নি।
অনেকেই ভুল বানান দেখিয়ে দিয়েছেন। তাই আমি একটা ভুল বানান ধরিয়ে দিচ্ছি।
বেতরাঘাত — বেতাঘাত
এখানে গল্পের শুরুটা যেমন হয়েছিল শেষটা তেমন হয়নি, কেমন যেন খাপছাড়া লেগেছে আর নামের ক্ষেত্রে কোথাও প্রবাল আবার কোথাও প্রবল এই অসংগতিটা লক্ষ্য করেছি
আর বানান ভুল ছিল……………’কিনতু’ -কিন্তু/’বেতরাঘাত’ -‘বেত্রাঘাত’
গল্পের মূল বার্তাটা নিঃসন্দেহে চমৎকার। আমরা অনেকেই মানুষকে মানুষ বলে মনে করি না, গরীব বলে নাক সিঁটকাই, কালো বলে নিন্দা করি, নিচুশ্রেণির বলে তাদের অবজ্ঞা করি। আমরা ভুলেই যাই তারাও আমাদের মতোই রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। গল্পটা শিক্ষণীয়।
গল্পের বিরামচিহ্নের পর স্পেস দেন নি। এছাড়া বানানেও প্রচুর ভুল আছে।
দুহাতে- দু’হাতে।
দাড়ান- দাঁড়ান
কিনতু- কিন্তু।
বেতরাঘাত- বেত্রাঘাত।
দাড়া- দাঁড়া।
সাধারন- সাধারণ।
ঘোঙাতে- গোঙাতে।
কথোপকথনে “_” চিহ্ন ব্যবহার করবেন।
শুভ কামনা।
NICE
nice onek sondor