লেখক : ইমরান হোসইন
হুট করে যখন বাবা মারা যায়, তখন সংসারের পুরো দায়িত্বটা এসে ভর করে বড় ভাইয়ার কাঁধে। এতগুলো বছর বাবা আর ভাইয়া দু’জনের উপার্জনেও সংসার চলতে হিমশিম খাচ্ছিল। আর এর মাঝেই বাবার চলে যাওয়া ভাইয়ার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলে। দুশ্চিন্তার এক মস্ত পাহাড় ভর করে তার মাথায়।
ছোট একটা এনজিওতে চাকরি করে ভাইয়া। নিজের খরচ চালিয়ে পরিবারে খুব বেশি কিছু দেওয়ার সামর্থ তার হয়ে উঠে না। তবে নিজের সবটা দিয়ে তিনি চেষ্টা করেন পরিবারটাকে টেনেটুনে চালিয়ে নিতে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? ধার দেনা করে ঘরের অবস্থা তখন সূচনীয়।
কিছু দিন হলো অনার্সের সনদ হাতে পেলাম। মনে হচ্ছিল সোনার হরিন যেন আমার হাতে লুটপুটি খাচ্ছে। এখন একটা ভালো দেখে চাকরি নেব আর পরিবারের সব অভাব-দুর্দশা দূর করব। পরিবারের সব ঋণ শুধ করে দিব। মাকে ভালো দেখে একটা শাড়ি কিনে দিব আর একটা বোরকা। জুতা জোড়াও যে তার ব্যবহারের উপযুক্ত নয়, সেই কথাগুলো তিনি কাউকেই বলেন না।
কেউ যদি মাকে কোথাও যাওয়ার নিমন্ত্রণ করেন, লক্ষ্য করি মুহূর্তেই মায়ের চেহারাটা মলিন হয়ে যায়। অতঃপর অসুস্থ শরীরের বাহানায় সেই নিমন্ত্রণ থেকে রেহায় পাবার জোড় চেষ্টা চালান। প্রায়শই তার এই মিথ্যে অভিনয় সফল হয় বটে। তবে সেদিন যখন মা ফুফাতো ভাইয়ার বিয়েতে যাবার আর কোনো বাহানা খুঁজে পেলেন না, তখন পাশের ঘরের কাকির কাছ থেকে একটা বোরকা আর এক জোড়া জুতা পরে যখন তিনি বাড়ি থেকে বের হন, তখন আমার চোখের কোণে অশ্রু ছিল না ঠিকই, তবে মনের গভীরে একটা চাপা যন্ত্রণা অনুভব করছিলাম। নিজেকে নিজেই একজন ব্যর্থ সন্তান এর অভিশাপ দিতে দিতে মাথাটা নিচু করেই মায়ের সাথে পা বাড়িয়েছিলাম।
সেদিন থেকেই মনের মাঝে দৃঢ় প্রত্যয় আমার, মায়ের সব কষ্ট আমি দূর করে দিব। তাঁকে একটা বোরকা আর এক জোড়া জুতা কিনে দেবার স্বপ্ন দেখে রোজ রাতে ঘুমাতে যাই আমি।
ভোর সকালের দিকেই বাড়িওয়ালা আমার দরজায় উপস্থিত। তিন মাসের বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়নি, সে কথা আমার মনেই ছিল না। বাড়িওয়ালা অনুগ্রহ করে অনেক দিন সময় দিলেও, এবার আর সময় দিতে নারাজ তিনি। এক সপ্তাহের ভিতর বাড়ি ভাড়া দিতে না পারলে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়ে গেলেন।
আমি একটা শব্দও করিনি। বিছানায় বসে মানিব্যাগটা হাতে তুলে নিলাম। সব মিলিয়ে তিনশত সাতাশ টাকা। আমার বন্ধু রাশেদ থেকে তিনশত টাকা ধার নিয়েছিলাম খাদ্য অধিদপ্তরের একটা দরখাস্ত করার জন্য আজই শেষ দিন।
তাছাড়া মিরপুর একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে আজ ইন্টারভিউ আছে। সেই সংবাদটাও ভুলে গিয়েছিলাম। মনে হতেই দ্রুত শার্ট-পেন্ট পরে প্রস্তুত হয়ে নিলাম। ফুটপাত থেকে একটা পাঁচ টাকা দামের বন আর একটা কলা খেয়ে যাত্রা শুরু করলাম ভাগ্যের সন্ধানে।
রাত তিনটার দিকে মা হঠাৎ ফোন দিয়ে জানালেন যে, খুব অসুস্থ তিনি। শুনেই বুকটা মুচরে উঠে। পকেটে কোনো টাকা নেই। পেটে খুব ক্ষুধা। এখন রান্নাও করি না। খাবার সময় হলে কোনো একটা বাহানায় চলে যাই রাশেদের কাছে। চলে আসতে চাইলেও না খেয়ে আসতে দেয়না বেচারা। হয়তো সে এটা ভালো করেই বুঝতে পারে- যার কাছে দরখাস্ত করার দুইশত টাকা নেই, তার ঘরের চুলায় আগুন জ্বলে না নিশ্চয়ই। তবে মাঝেমাঝে কোনো বাহানা খুঁজে না পেলে আর যাওয়া হয় না, সেই বেলাটা উপোষ কাটে অথবা একটা বন-কলা খেয়েই কাটিয়ে দেই।
আজ রাতে বন-কলা খাবার মতো অবশিষ্ট টাকাটাও ছিল না পকেটে। তাই পেটে কিছুই পড়েনি। ক্ষুধায় মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। অন্য দিকে মায়ের ফোন। কিছু বুঝতে না পেরে রাশেদের বাসার দিকে চললাম। দু’একটা মসজিদ থেকে তখন ফজরের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছিল।
সকালের দিকেই বাড়ি পৌঁছে গেলাম। মায়ের ঘরে পা দিতেই বুকটা ধুক্ করে উঠে আমার। মা বিছানায় নিশ্চল মূর্তি হয়ে শুয়ে আছে। ছোট কাকি মায়ের মাথায় পানি দিচ্ছিল। আমাকে দেখেই বলেন তিনি, “মাঝরাত থেকে হঠাৎ প্রেশারটা বাইড়া গেছে। ঠিক হইয়া যাইবো, তুমি গিয়ে রেস্ট নাও।”
আমি কোনো কথা না বলেই মায়ের পাশে বিছানায় গিয়ে বসলাম। অল্প কিছুক্ষণ পরই মা চোখ জোড়া খুলে আমার দিকে তাকিয়ে একটা ঢুক গিলেন। আমার কেন যেন মনে হয়, মা তার যন্ত্রণাগুলো গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে কণ্ঠনালী থেকে সেগুলো যেন সরছেই না।
মা আমার দিকে হাতটা বাড়িয়ে দেয়। আমি মায়ের আরও কাছে গিয়ে বসে মায়ের হাতটা ধরি। মা কয়েক ফোঁটা অশ্রু ছেড়ে দিয়ে ফিসফিস করে বলে, “আমার কী সারাটা জীবন কষ্টে কষ্টেই কাটবো?”
মাযের কথার কোনো জবাব আমি খুঁজে পাইনি, পাবার কথাও নয়। নিজের ব্যর্থতার কথা কী দিয়ে প্রকাশ করব? কিছুটা সময় নিয়ে আমি মাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, “কী হয়েছে মা?”
অনেকটা সময় মা কোনো কথা বলে না। একটু পর পর মায়ের চোখ থেকে শুধু অশ্রুর ফোঁটা গড়িয়ে পড়ছে। আমি মৃদু কণ্ঠে পুনরায় প্রশ্নটির পুনরাবৃত্তি করতেই কাকি বলে উঠেন, “এখন ভাবীর সাথে কথা বলাটা ঠিক হবে না রিদু। তুমি বাইরে আস।”
কাকির কথায় আমি কাকির সাথে বাহিরে আসলাম। বিগত কয়েক দিনের সব ঘটনা খুলে বললেন তিনি।
ঘটনার শুরু বেশ কিছু দিন থেকেই। সমস্যাটা আমার ভাবীকে নিয়ে। বাবা মারা যাবার পর থেকেই ভাবী একটু বেসামাল হয়ে উঠেছে। মায়ের সাথে ছোট-খাট বিষয় নিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে দিত। ভাইয়ার সাথে রাগারাগি করত। তার মূল কথা ছিল তিনি আমাদের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে থাকতে চান। তার মনে হচ্ছিল, ভাইয়া তার সব উপার্জন আমাদের পরিবারে দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তারা যদি আলাদা থাকে, তবে তারা নিজেদের ভবিষ্যত গড়তে পারবে। ভাবীর এই আবদার বহুদিনের। তবে ভাইয়া কখনোই ভাবিকে সমর্থন দেয়নি। আর বাবার ভয়ে ভাবিও এতদিন উঁচু গলায় কিছু বলার সাহস করতে পারেনি। কিন্তু ইদানীং ভাইয়ার সাথে রাগারাগি, মায়ের সাথে ঝগড়া নিত্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছি। অবশেষে গতকাল মায়ের সাথে তুচ্ছ ঘটনায় ঝগড়া বাধিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে চলে যান তিনি। আর যাবার পূর্বে বলে যান, তাদেরকে আলাদা করে না দিলে তিনি আর ভাইয়ার সাথে থাকবেন না।
কাকি যখন কথাগুলো বলছিলেন, আমার খুব রাগ হচ্ছিল। রাগটা নিয়ন্ত্রণে এনে ভাইয়াকে ফোন দিলাম। ভাইয়া শুধু এইটুকোই বললো, “আমি কিছু জানি না, মা যা বলবে তাই হবে।”
আমি ভাইয়ার অসহায়ত্ব বুঝতে পারি। আমি এটাও জানি মা কী বলবে। যে মানুষটা সারাটা জীবন নিজের ছেলেদের ভালোবাসা, মায়া-মমতায় আগলে রেখেছেন, তিনি কখনো চাইবেন না তার ছেলেটা অনিশ্চিৎ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাক। তাছাড়া ভাইয়ার ফুটফুটে দুইটা বাচ্চা, তাদেরই বা কী হবে? সেসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই আমার কাছে।
আকাশে জ্বলজ্বল করছে চাঁদ। একটা সময় এই চাঁদের আলোতে জোছনা বিলাস করতাম। মনের মাঝে প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যেত পূর্ণিমার রাতগুলোতে। তবে আজ মনে কোনো আনন্দ নেই। অমাসব্যার নিকশ কালো অন্ধকারের মতোই আমার মনের আকাশ।
মা এখন কিছুটা ভালো। তবে ভয়ঙ্কর দুশ্চিন্তার ছাপ তাঁর চেহারায়। রাতের খাবারের পর মা আমাকে কাছে ডাকলেন। আমার দিকে তাকিয়ে শান্ত কণ্ঠে বললেন, “তোর ভাই-ভাবীর সাথে কথা বল। তাদের বল, তাদের মতো করে থাকতে। আমি তো বুড়া হয়ে গেছিরে। আজ আছি তো কাল নেই। আমার জন্য কেন তাদের জীবনটা নষ্ট হবে?”
আমি কোনো কথা বললাম না, শুধু চুপচাপ মায়ের কথাগুলো শুনে গেলাম। মনের যন্ত্রণা মাখানো অনেক কথা বললেন তিনি। মাঝেমাঝে বাচ্চাদের মতো কেঁদে উঠলেন। মায়ের সব অনুভূতিতে আমি নিশ্চুপ। অসহায়ের মতো উদাসী দৃষ্টিতে জানালা দিয়ে বাইরের জোছনা দেখছিলাম। ভাবছিলাম, কত দ্রুত জীবনের রং বদলে যেতে পারে!
ভাবি ভাইয়ার সাথে চলে গিয়েছে। আমি খুব ভালো করেই জানি, ভাইয়ার ক্ষুদ্র বেতনের টাকা টুকু আর ঘরে আসবে না। ভাই হয়তো চাইলেও মায়ের হাতে হাজার টাকার কয়েকটা নোট গুজে দিয়ে বলবে না, ‘আর পারবো না মা।’
কথাগুলো আর ভাবতে পারছি না। সহস্র দুশ্চিন্তা আমার মস্তিষ্ককে যেন অচল করে দিচ্ছিল। এতসবের মাঝেই রাশেদ রাতে ফোন করে বললো, আমার জন্য একটা টিউশন ঠিক করে নিয়েছে সে। তাই সকাল সকাল ঢাকার দিকে চললাম। বাড়িতে রয়ে গেল আমার বৃদ্ধ মা, একা।
আমার পুরাতন বাসাটা পাল্টে নতুন একটা মেসে উঠলাম। থাকা-খাওয়া তুলনামূলক অনেক সস্তা। তবে এখানকার অধিকাংশ লোকই অশিক্ষিত। দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ। রাশেদ অনেক জবরদস্তি করেছে তার ফ্লাটে উঠতে। তবে একটা মানুষের কাছে কতটা ঋনী হওয়া যায়? নিজের ব্যক্তিত্ববোধটা যেন প্রবলভাবে বাধা দেয়। তাই এখন আর খুব প্রয়োজন ছাড়া রাশেদের কাছে যাওয়া হয় না।
বাড়ি থেকে আসার পর অনেকগুলো দিন পেরিয়ে গেল। সারাদিন ক্ষয়িত জুতা জোড়াকে নিঃস্ব করে চাকরি খুঁজা, দিন শেষে টিউশনি আর রাতে মায়ের একটা বোরকা ও জুতা জোড়ার স্বপ্ন দেখা, এটাই আমার জীবন।
কাল রাতে মা ফোন দিয়ে জানিয়েছিল- শরীর নাকি বেশ খারাপ। মাকে বলেছিলাম, “মা, বাড়ির পাশের জামিটা বেচে দাও না। বেচে তোমার চিকিৎসা করাও।”
মা বললো, “তোদের তো কিছুই দিয়ে যেতে পারিনি। এই সম্বলটুকু নিজের জন্য শেষ করে ফেললে, তোদেরকে কী দিয়ে যাব?”
মায়ের কথা শুনে একবার বলতে ইচ্ছে করছিল, ‘মা, তুমি আমাদের জন্ম দিয়েছে। ভালোবাসা দিয়ে লালন-পালন করে এতটা বড় করেছ। আর কী দিবে মা? আর কিছু কেন দিতে হবে? যেই সন্তানদের জন্য সারাটা জীবন শেষ করলো, তারা তোমাকে কী দিল?’
তবে কথাগুলো বলতে পারিনি। মায়ের কথা আমি নীরবে মেনে নিলাম।
প্রায় এক বছর পর।
চাকরির প্রথম বেতনটা পেয়েই মায়ের জন্য একটা কালো বোরকা আর এক জোড়া বাটা জুতা কিনে নিলাম। একটা শাড়িও নিলাম। কয়েক দিন পরই আমার মামাতো ভাইযের বিয়ে। এবার মাকে কোনো বাহানা বানাতে হবে না। বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে মায়ের পিছু পিছু হেঁটে আমি নিজেকে নিজের দেওয়া অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে পারব।
রাতে সব গুছিয়ে নিলাম। মায়ের জন্য কেনা কাপড়গুলো অতি যত্নে ব্যাগে পুরে নিলাম। ভাবছিলাম এবার মাকে ঢাকা নিয়ে আসব। ছোট একটা বাসা ঠিক করে নিব। কয়েকদিন পর, মায়ের পছন্দ মতো একটা লাল টুকটুকে বউ নিয়ে আসব। অনেক স্বপ্ন নিয়ে, সব গুছিয়ে রাতে যখন ঘুমাতে যাব, ঠিক তখনি ভাইয়ার ফোনটা আসে। ভাইয়া আমাকে দ্রুত বাড়ি যেতে বলে। আমি জানতে চাইলাম, “কেন ভাই?”
“আমি জানি না রে। বাড়ি থেকে কাকি ফোন দিয়ে বলে, মা তোকে দ্রুত বাড়ি যেতে বলেছে। কাকি নাকি তোর নাম্বার খুঁজে পাচ্ছে না, তাই আমাকে ফোন দিল।”
ভাইয়ার কথাগুলো শুনেই আমার মনের মাঝে এক অজানা ভয় কাজ করছিল। গুছানো ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম।
যখন বাড়ি পৌঁছলাম, রাত তখন প্রায় একটা বাজে। আমাদের বাড়ির পাশে অনেক মানুষ চোখে পড়লো। আমি ঘরে ঢুকতেই কোথা থেকে যেন হুড়মুড়িয়ে এসে ভাইয়া আমাকে জাড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। বাচ্চাদের মতো কাঁদতে কাঁদতে বলে, “ভাইরে, মা আমাদের ছেড়ে চলে গেল রে!”
ভাইয়ার কথাটা শুনে আমি ক্ষণকাল স্তব্ধ হয়ে থাকলাম। হাত থেকে ব্যাগটা খসে পড়লো মেঝেতে। বুকের ভিতরটায় আমার যেন আকাশ-বাতাস এক করে প্রলয়ংকর ঝড় উঠল।
আমি খানিকটা এগিয়ে মায়ের রুমের দিকে চললাম। নিস্তব্ধ হয়ে মা মেঝেতে শুয়ে আছে। পুরোটা শরীর চাদরে ঢাকা। কাকি মুখ থেকে চাদরটা সরিয়ে দিলেন। আমার বার বার মনে হচ্ছিল, মা বোধ হয় এখনি চোখ জোড়া মেলে ফিসফিস করে আমাকে কাছে ডাকবে। আমি মায়ের হাত ধরে বলব, ‘মা, আমাদের কষ্টের দিন শেষে গো। তোমার জন্য আমি একটা শাড়ি, বোরকা আর এক জোড়া জুতা নিয়ে এসেছি। এবার আর কারো কাছ থেকে ধার নিয়ে তোমাকে বিয়েতে যেতে হবে না মা।’
আমি মায়ের দিকে অনেকটা সময় তাকিয়ে থাকলাম। মা আমাকে একদম ডাকলো না। একটি বারের জন্য চোখ মেলেও তাকালো না। অনেকটা সময় পর কাকি মায়ের মুখটা চাদর দিয়ে ডেকে দিল। বুকের ভিতরটা আমার ছেৎ করে উঠলো। আকাশ-বাতাস এক করে একটা চিৎকার দিলাম আমি।
মা বুঝি সত্যিই চলে গেল? নিজেকে খুব অসহায় আর নিঃস্ব মনে হচ্ছিল। আমার রোজ রাতের স্বপ্নটা স্বপ্ন হয়েই রয়ে গেল বুকের মাঝে। বোধ হয়, আমাকে সারাটা জীবন যন্ত্রণা দেবার জন্য।
হৃদয়ের গহীনে নাড়া দেয়ার মত একটা গল্প পড়লাম। মায়ের নিঃস্বার্থ ভাবে আমাদের ভালোবাসে, কত যত্নে লালন পালন করে, কিন্তু বিনিময়ে তারা কি পায়? আমাদের থেকে অবহেলা? গল্পের রিদু তার মাকে নিয়ে দেখা স্বপ্নটাও শেষ পর্যন্ত পূরণ করতে পারল না। গল্পের শেষটুকু ছিল খুবই মর্মান্তিক।
পৃথিবীর সকল মায়েরা তাদের যোগ্য সম্মান পাক, তাদের
দেয়া স্নেহের মূল্য পাক।
অসাধারণ লিখেছেন। বানানে কিছু ভুল আছে। শুধরে দিচ্ছি।
সূচনীয়- শোচনীয়।
হরিন- হরিণ।
শার্ট-পেন্ট- শার্ট-প্যান্ট।
ঢুক- ঢোঁক।
অমাসব্যার- অমাবস্যার।
গুজে- গুঁজে।
বাস্তবতা এতোটা নির্মম কেন হয় বলেন তো?
কেন রিদুর মা একটু বুক ভরে তাজা শ্বাস নিতে পারেননি?
কেন রিদু তার মাকে বোরকা আর জুতাজোড়া পড়িয়ে দিতে পারলো না?
কেন মানুষের স্বপ্নগুলা অধরাই থেকে যাবে?
এই কেন’র উত্তর কেবল উপরওয়ালাই দিতে পারবেন।
তিনি তার প্রিয় বান্দাদের জন্য হয়তো পরকালে অফুরন্ত শান্তি রেখেছেন, আর তাই দুনিয়াতে এতো কষ্ট।
লেখককে ধন্যবাদ, এতো সুন্দর করে গল্পটা উপস্থাপন করার জন্য। যেন একদম ভেতরে নাড়া দিলো গল্পটা , কান্না আসছিলো গল্পের শেষদিকে।
বানানে অল্পকিছু ভূল আছে, শোধরে নেবেন।
শুভকামনা রইলো।