বৈষম্য
প্রকাশিত: অগাস্ট ৮, ২০২০
লেখকঃ Mohasina Begum

 2,633 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ Mohasina Begum

লেখাঃশারমিন

অামি শারতাজ। ঢাকার বাসিন্দা। এস এস সি পরীক্ষার পর বাবার কাছে বায়না ধরলাম ফুফুর শ্বশুড়বাড়ি চট্টগ্রামে যাব। ফুফুর শ্বশুড়বাড়ির মানুষদের অামার মা তেমন একটা পছন্দ করেন না। সেই পাঁচ বছর অাগে ফুফুর বিয়ের সময় ওয়ালিমাতে একবার গিয়েছিলাম চট্টগ্রামে। তারপর অার যাওয়া হয়নি। সেই শেষ। মা’ই যেতে দিতেন না। এখন যেতে চাই। কারণ, অামার প্রিয় বন্ধু অানীনের বাড়িও চট্টগ্রামে। পরীক্ষা শেষে সে বাড়ি চলে গেছে। তাই সেখানে বেড়াতে ইচ্ছা করছে অামার। ফুফুকেও দেখা হবে, চট্টগ্রামও ঘুরা হবে। ফুফু অবশ্য বছরে দুই একবার অাসেন ঢাকায়। তাও হয় কোন চিকিৎসার কাজে, নয় তো বা শ্বাশুড়ির অাবদার মিটাতে। ফুফুর শ্বাশুড়ি ভীষণ লোভী। স্পষ্ট কথায় কোন কিছু বলতে পারেন না মানে চায়তে পারেন না। ইনিয়েবিনিয়ে কথার চাতুরতায় চায়। শ্বাশুড়ির নাম সখিনা বেগম। আমি আমার দাদিকে দেখেছি এক রকম সাবভাবের যেখানে কোন কুটিলতা নেই। আরেকজন সখিনা বেগমকে জেনেছি অন্যরকম, যে পুরো জটিলতায় ভরপুর। দেখা যাক কী হয়।

অামার ফুফুর নাম কাব্য। ফুফার নাম সিয়াম। তাদের চার বছরের একটা মেয়ে অাছে, নাম ইকরা। সিয়াম ফুফারা চার ভাই, এক বোন। তিন ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে। অার এক ভাই, এক বোন বিয়ে দেবার বাকি অাছে।
অামার ফুফুর বিয়েটা সম্পর্কের বিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবস্থায় দু’জনের পরিচয়। ফুফার মা প্রথমে তাদের সম্পর্ক মেনে নেননি। পরে ফুফার জেদের কাছে হার মানেন। ধুমধাম করে বিয়ে হয় ফুফুর। তখন অামি ক্লাস সিক্সে। এখনো অাধোঃ অাধোঃ মনে অাছে বিয়েতে ফুফুর শ্বাশুড়ির নাটকীয়তা। সবকিছুতে দোষ ধরে ধরে কথা বলেছিলেন। যাই হোক, চট্টগ্রাম অামি যাবোই। এবার অামায় কেউ অাটকাতে পারবে না। বয়স সতেরো চলছে, কম কথা!

ফুফুকে না জানিয়ে দিলাম রওনা চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। তার অাগে বাবা মায়ের অনুমতি নিয়ে নিলাম, খরচের টাকা নিলাম, অার সাথে ছোট চাচার পাকনা বুদ্ধি কিছু ধার নিলাম, বিপদে কাজে অাসতে পারে।

প্রায় অাট ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছলাম চট্টগ্রাম। জ্যামের কারণে অনেক সময় লাগল চট্টগ্রাম পৌঁছতে। চট্টগ্রামের অামানবাজার ফুফুর শ্বশুরবাড়ি। ঠিকানা বরাবর পৌঁছে গেলাম। তখন সন্ধ্যে সাতটা। তিনটি বাড়ি পাশাপাশি লাগানো, গেইট কিন্তু একটি। গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে অাছি। কাউকে দেখতে পারছি না। কিছুক্ষণ পর, গেইটের ভিতর ঢুকতেই ইকরার কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম। বুঝে গেলাম, ফুফুর শ্বশুরবাড়ি কোনটি। কলিংবেল দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েছিলাম। কেউ দরজা খুলছে না। পরে দেখি পিছন থেকে এক চৌদ্দ কী পনেরো বছর বয়সের ছেলে এসে বলল, ” অনে হারে চন?”( অাপনি কাকে চাচ্ছেন?)

অামি বললাম, ” অামি ঢাকা থেকে এসেছি। কাব্যের ভাইপো। কাব্য ফুফুকে ডেকে দাও।”

ছেলেটি কিছুক্ষণ অামাকে ভালো করে দেখে নিল। তারপর বলল, ” এঁড়ে হাব্য নামে কেউ ন থাহে। অনে ভুল ঠিয়ানায় অাঁইসসুন। যন গোঁই।” ( এখানে কাব্য নামে কেউ থাকে না। অাপনি ভুল ঠিকানায় অাসছেন। চলে যান।)

অামি তার কথা কিছুই বুঝিনি। চট্টগ্রামের ভাষা দারুণ কঠিন। বুঝার সাধ্য অামার নাই। অামি শুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। অার কিছু না ভেবে অামি অাবার কলিংবেল দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটি এসে অামাকে পাঁজাকোলা করে বেঁধে ফেলল। বুঝতে বাকি নেই, সে অামাকে চোর বা ডাকাতদের কেউ ভেবেছে। চিৎকার করে বলতে লাগল,” চাচা চাচি চাঁই যন। হন্ডে অনরা? অাঁই ধইজ্জি।” ( চাচা চাচি দেখে যান। কোথায় অাপনারা? অামি ধরেছি।)

ছেলেটির চিৎকার, চেঁচামেচিতে অাশেপাশের সবাই এসে গেল অামায় দেখতে। কাব্য ফুফুই প্রথমে বলে উঠলেন, ” কুদ্দুস, এই ইতেরে ছাড়। ইতে অাঁর ভাইপুত।”( কুদ্দুস, এই ওকে ছাড়। সে অামার ভাইপো।)

কাব্য ফুফুর কথায় ছেলেটি অামাকে ছেড়ে দিল। ছেলেটির নামটা জেনেছি, কুদ্দুস। সবচেয়ে অবাক হলাম, ফুফুর কথা শুনে। ভালই চট্টগ্রামের অাঞ্চলিক ভাষা শিখে ফেলেছেন।

—– ” শারতাজ, তুই! এখানে! কেমন অাছিস বাবা? কিছু হয়েছে? অামাকে না জানিয়ে চলে অাসলি যে?” ফুফু বললেন।

—– ” পরীক্ষা শেষ। তোমায় দেখতে ইচ্ছে হলো। তাই চলে অাসলাম। অামি অাসলে তোমাকে সারপ্রাইজ দেবো বলে জানিয়ে অাসিনি। বাবা মাকেও তোমাকে বলতে নিষেধ করেছি। ইকরার কন্ঠ শুনে এই বাড়িতে কলিংবেল দিলাম। ভেবেছিলাম এটা তোমার শ্বশুরবাড়ি। এখন দেখছি, এটা না।”

কাব্য ফুফু হেসে বললেন, ” এটা অামার চাচাত ভাসুরের বাড়ি। নোভা ছাড়া সবাই দাওয়াতে গেছে। নোভা ইকরাকে নিয়েছিল। তাই ইকরা এখানে । ও হ্যা, নোভা অামার চাচাত ভাসুরের মেয়ে।”

ঐ বাড়ির দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে অাছে। এতক্ষণে সব ক্লিয়ার হলো। নোভা মেয়েটা বাড়িতে একা। তাই দরজা না খুলে কুদ্দুসকে খবর দিয়েছিল। পরে জানলাম, কুদ্দুস হলো বাড়ির দারোয়ান।

অামাকে কাব্য ফুফু তার শ্বশুরবাড়ির ভিতরে নিয়ে গিয়ে বসালেন। এখনো ফুফার ভাইদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ হয়নি। তাই,ফুফা এখনো নিজে বাড়ি করেননি।

ফ্রেশ হয়ে বসে অাছি অথচ বাড়ির অন্য মানুষদের সাথে এখনো পরিচয় হয়নি। ভিড়ের জটলা ঠেলে ফুফু তড়িঘড়ি করে অামাকে নিয়ে অাসলেন। কারো সাথে পরিচিত হবার তখন সুযোগ পাইনি।

কিছুক্ষণ পর ফুফুর শ্বাশুরী সখিনা বেগম অাসলেন। সাথে অারো দু’জন মহিলা। অামি দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে বসলাম।

—– ” কী যুগ অাঁইসসি! পঅদ ধরি সালাম ধনর চল উডি যার গুঁয়। মাইনষের মনর তুন ধর্ম কর্ম বেগ যার গুঁয়।” ( কী যুগ এসেছে! পায়ে ধরে সালাম দেওয়ার চলন উঠে যাচ্ছে। মানুষের মন থেকে ধর্ম কর্ম সব চলে যাচ্ছে।) সখিনা বেগম তার সাথে অাসা মহিলাদের দিকে তাকিয়ে ইঙ্গিত করে কথা বলছেন।

উনার কথার জবাবে একজন বলে উঠলেন, ” হালি অাতত অাঁইসসি। ফোয়া ফাডাদদে কিছু ন উডে অাতত?( খালি হাতে এসেছে। ছেলেকে পাঠিয়েছে, কিছু হাতে উঠেনি?)

অামি তাদের কথা কিছুই বুঝিনি। তারা নিজেদের মধ্যে অনেক কথা বলতে লাগলেন। অামাকে কোন প্রশ্নই করছেন না। তাদের অাচরণ দেখে বুঝা গেল, অামার অাসাটা তাদের পছন্দ হয়নি।

ফুফু এসে বললেন, ” চাচী মা, এ অামার ভাইপো শারতাজ। এবার এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছে। অামাকে দেখার জন্য চলে এসেছে। অনেকদিন বাপের বাড়ি যাই না তো,তাই। বাচ্চা মানুষ তাই কিছু কিনতে জানে না। মানে ভাল, খারাপ বিচার করে কেনাকাটা করতে জানেনা। তাই, বড় ভাইয়া তিন হাজার টাকা পাঠিয়েছেন যাতে অামি কিছু কিনি। নিন চা নিন। শারতাজ বাবা, নাও নাস্তা কর। কিছু মনে করবেন না, লং জার্নি করে অাসছে তো, টায়ার্ড, তাই পায়ে ধরে সালাম করতে ভুলে গেছে।”

ফুফুর কথায় বুঝা গেল, সখিনা বেগমের পাশের মহিলাগুলো হল ফুফুর চাচী শ্বাশুড়ি। তারা এতক্ষণ অামার খালি হাতে অাসা নিয়ে সমালোচনা করছিলেন অার পা ধরে সালাম না করার কারণে মনে অনেক কিছু ভেবে নিয়েছেন।

অামি বললাম, ” অামি যতদূর জানি, পায়ে ধরে সালাম করা গুণাহ। তাই অামি করিনি।” অামার কথা শুনে ফুফু ফিসফিসিয়ে বললেন, ” মুখের উপর অার কিছু বলিস না। এটা অভদ্রতা। ” ফুফুর এই কথা শুনার পর অামি অার কোন কথা বলিনি।

উনাদের বকবক কথাসব শুনতে শুনতে অার ভাল লাগছিল না। ফুফু সেটা বুঝতে পেরে অামাকে তার বেডরুমে নিয়ে গেলেন। অামি ফুফুকে বললাম, ” ফুফু, তুমি মিথ্যে বললে কেন, অামি তো কিছুই অানিনি। বাবা শুধু অাসা যাবার গাড়ি ভাড়া দিয়েছেন। ”

——- ” এ রকম মিথ্যে মাঝে মধ্যে বলতে হয়। সংসারে শান্তি বজায় রাখতে হলে মিথ্যা না বলে উপায় নেই।”

অামি দেখছি, ফুফুকে অাসলে তার শ্বাশুড়ি অনেক হিংসা করেন। এভাবে হয়তো প্রতিনিয়ত তাকে কথা শুনতে হয়। ফুফু নিজের বুদ্ধিতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখেন তার শ্বাশুড়ির কাছ থেকে। অামি বললাম, ” ফুফু, এভাবে কি তিনি তার সব ছেলের বউদের সাথে করেন?”

—– ” না। করেন না। সিয়াম ছাড়া বাকি সব ছেলে মেজাজি স্বভাবের। সিয়াম কোন কিছুতে প্রতিবাদ করে না। অন্য ভাইগুলো করে। তাই তাদের বউদের ভয় করে চলেন। সহজে সব কথায় তাদের দোষ ধরতে পারেন না। সিয়াম মাকে সম্মান করে বিধায় সিয়াম চুপ থাকে। তাই সবকিছুতে অামার দোষ খুঁজে চলেন। অামার সাথে এমন অাচরণ করে যদি অামার শ্বাশুড়ি সুখে থাকেন, ভাল থাকেন, তাহলে থাক না, এসব করে! তিনি ভাল থাকলে, অামরা ভাল থাকবো।” ফুফু বললেন।

—– ” তার মানে, ফুফাও? ফুফু, তুমি এত কিছু কীভাবে সহ্য করে থাকো?”

—— ” তোর ফুফা খুব ভাল মানুষ। সে কখনো অামাকে কষ্ট দেয়নি। এমনকি তার মা তাকে অামার বিরুদ্ধে বললেও সে অামাকে কখনো শাসায়নি। অাবার মায়ের বিরোধিতাও কখনো করেনি। সবকিছু মানিয়ে চলে। অামাকেও মানিয়ে চলতে সাহায্য করে। যার কারণে, শ্বাশুড়ির কটু কথায় নয়, অামার স্বামীর কারণে অামার সংসার টিকে অাছে। মেয়েরা সবকিছু সহ্য করতে পারে, যদি স্বামীর ভালোবাসা পায়।” ফুফু বললেন।

—– ” বুঝতে পারছি। অামার ফুফুর মতো মেয়ে অার হয় না। ফুফার মতো ছেলেও হয় না। তাই তো ফুফার দেয়া জিনিস অামার বাবা দিয়েছেন বলে শ্বশুরবাড়িতে সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়। অামার ফুফু নিজের ভাইকেও বড় করে রেখেছেন। ”

—– ” অামার ভাইয়ের নিজের সংসার, সন্তান অাছে। এখন তাদের নিয়ে ভাববার সময়। অামি কেন অামার ভাইকে অামাকে নিয়ে চিন্তায় ফেলব? জানি, অামি চাইলে অামার ভাই অামাকে ফিরিয়ে দেবেন না। তবুও, অামি তাকে কষ্টে ফেলতে চাই না।” ফুফুর এই কথা শুনে অাবেগী হয়ে গেলাম। বললাম, ” হুমম।”

অামার চুলে বিলি কাটতে কাটতে ফুফু বললেন, ” হয়েছে, হয়েছে। বেশ বুঝতে শিখে গেছিস। অার বুঝতে হবে না। তোর ফুফা অাসলে একসাথে ভাত খেতে বসবি। ”

রাত দশটার দিকে ফুফা অাসলেন। ফুফা একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। তাছাড়া, নিউমার্কেটে কাপড়ের পৈত্রিক দোকান অাছে। দিনশেষে সেখানেও যেতে হয়, খোঁজখবর নিতে হয়। অামান বাজার থেকে নিউ মার্কেট অনেক দূর। সেখান থেকে অাসতে অাসতে রাত দশটা বেজে যায়। ফুফার সাথে কুশলাদি বিনিময়ের পর ফুফা ফ্রেশ হতে চলে গেলেন। টেবিলে রাতের খাবার সাজানো হচ্ছে। ফুফুর দুই জা’ টেবিলে খাবার সাজাচ্ছেন। অার কাব্য ফুফু রান্নাঘরের সব তদারকিতে অাছেন। ফুফুর দুই জা’য়ের দুই ছেলে,নাম মিনহাজ অার মিজান। অামি লক্ষ্য করে দেখলাম, সখিনা বেগম তার দুই নাতিকে নাতনি ইকরার চেয়ে বেশি পছন্দ করেন।

হঠাৎ ,খেয়াল করলাম, ইকরা তার দাদীর কাছ থেকে কী যেন চাইছে, কিন্তু, তার দাদি তা তাকে দিচ্ছেন না। ইকরা কান্না জুড়িয়ে দিলে সিয়াম ফুফা এসে ইকরাকে শান্ত করান। তারপর কোলে নিয়ে অামার কাছে এসে বসেন। ফুফার কাছে জিজ্ঞেস করলাম, ” ইকরা কী চেয়েছিল ওর দাদির কাছ থেকে? ”

ফুফা মাথা নিচু করে বসে অাছেন। কিছু বলছেন না। সখিনা বেগম এসে ফুফাকে অনেক কথা শুনিয়ে দিলেন, কথাগুলো এত দ্রুত বললেন যে, তার ছিটেফোঁটা অামি কিছুই বুঝিনি।

সখিনা তার অারেক নাতিকে কোলে নিয়ে বললেন, ” অামার দাদু ভাইয়ের জন্যই তো এনেছি। কি দাদু ভাই পছন্দ হয়নি?”

অামি অবাক হলাম এই শুনে যে, তিনি শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারেন। অথচ, অামার সাথে পরিচয়ের সময় একবারও এভাবে কথা বলেননি।

ইকরার কান্না ফুফা থামাতেই পারছেন না। শেষে বমি করে দিলো ইকরা। তা দেখে ইকরার দাদির কী নাক সিটকানোর চিৎকার! ” ঘর গো নাফাক গরি ফেলাইয়ি। ইকরার মা হন্ডে? হারা সাফ গর। মাইয়ার এত তাল ভালা ন। ঠান্ডা হর, মাইয়ারে।”( ঘরটা নাপাক করে ফেলেছে। ইকরার মা কোথায়? তাড়াতাড়ি পরিস্কার কর। মেয়ের এত অাবদার ভাল না। শান্ত করাও।)

ফুফুকে দেখলাম তা পরিস্কার করছেন হাসি মুখে, কথার অাদলে মেয়েকে অাদর দিতে দিতে। ফুফু ইকরাকে কোলে নিলেন অার ফুফা অামার সাথে খেতে বসলেন। সাথে পরিবারের অন্য পুরুষ সদস্যরাও। কথার ফাঁকে তারা অামার বাবা, মা, অামার ছোট চাচা কেমন অাছেন, কী করেন… এসব জিজ্ঞেস করলেন। খাওয়া শেষে হঠাৎ দেখলাম, মিনহাজ খাওয়ার টেবিলের পাশে, মেঝেতে প্রশ্রাব করে দিলো। কিন্তু, সখিনা বেগমের মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। তিনি নিজ হাতে নাতিকে পরিস্কার করালেন, মেঝে পরিস্কার করলেন। পুরো ব্যাপারটাই অামার কাছে অবাক লাগল, কেননা ইকরা, মিনহাজ দুই জনেই তার অাপন নাতি নাতনি। অথচ, তার কাছে অাদরের দাড়িপাল্লায় এই দুই জনের অবস্থান ভিন্ন।

খাবার শেষে ফুফা অামাকে অামার শোবার ঘর দেখিয়ে দিলেন। অামি ফুফাকে বললাম, ” দাদি কি সব সময় ইকরাকে নিয়ে এমন অাচরণ করেন?”

ফুফা হেসে বললেন, ” অামার মা সব সময় নাতিদের পছন্দ করেন। সব সময় বলেন, মরে গেলে নাতিরা খাট বহন করবে, কবর জিয়ারত করবে, বংশ ধরে রাখবে। নাতনিরা তো পরের বাড়ি চলে যাবে। তারা তো অার দেখবে না।”

অামি বললাম, ” কী বলেন! এসব কথা তাকে মানায়! অাপনি কিছু বলেন না যে!”

—– ” ইকরা হবার পর প্রথম প্রথম বলতাম, মাকে বুঝাতাম। কিন্তু, দেখা গেলো, মা বিষয়টা অন্যভাবে নিয়ে কেঁদে কেটে একাকার করে ফেলতেন, অভিশাপ দিতে থাকতেন। সবাই বুঝে উনার মন মেজাজ। তাই, অার কিছু বলি না। ” ফুফা কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর অাবার বললেন, ” অাসলে অামার মা চেয়েছিলেন অামি যেন তার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করি। কিন্তু, অামি কাব্যকে বিয়ে করব বলাতে তখন অামার উপর থেকে তিনি মন তুলে ফেলেছেন। অামার বাবা কিন্তু কাব্যকে বেশ পছন্দ করতেন। মৃত্যুর অাগমূর্হুত পর্যন্ত কাব্যেকে মেনে নেয়ার কথা মাকে বুঝিয়েছিলেন। অামি জানি, কাব্যের প্রতি অনেক অবহেলা হচ্ছে, অনেক অন্যায় হচ্ছে। তা সত্ত্বেও কাব্য কোনদিন তোমার বাবা মাকে কিছু বলেনি। কখনো শ্বশুর বাড়ির বদনাম করেনি। হ্যা, মাঝে মাঝে অামার মায়ের খায়েস মিটানোর জন্য কাব্য তোমাদের বাড়ি গেলেও অামি তোমার বাবা মাকে অনেককিছু বলে সান্ত্বনা দিই, যাতে কাব্যকে নিয়ে কোন চিন্তা না করেন। মায়ের খায়েসটা অামি গোপনে মিটিয়ে ফেলি। অার অাজ তুমি এসে এত অল্প সময়ে অনেক কিছু দেখে ফেলেছো। হয়তো, তোমার বাবা মাকে তুমি এসব বলবে। তাঁরা কী ভাববেন, সেটা ভেবে লজ্জ্বা লাগছে। অাসলে সময়ই সবকিছু ঠিক করে দেবে। অামি এটা বিশ্বাস করি।”

কথার এক পর্যায়ে ফুফু অাসলেন। অামার মোবাইলের দিকে তাকিয়ে বললেন, ” এই অল্প বয়সে স্মার্ট ফোন কেন কিনে দিলেন, ভাইয়া? যে অস্থির সময় চলছে, তুই তো নষ্ট হয়ে যাবি। একে তো অনেক পাকা বুদ্ধি হয়েছে, তার উপর ছোট ভাইয়ের মত স্বভাব।”

অামি ফুফুকে নির্ভয় দিয়ে বললাম ” ফুফু অামার সবকিছুর পাসওয়ার্ড অামার বাবা মায়ের জানা অাছে। সুতরাং, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”

ফুফা ফুফুর দিকে তাকিয়ে বললেন, ” মাকে ঔষধ খাইয়ে দিয়ে এসেছো? ”

—— ” হুমম। এখন ঘুমোচ্ছেন।” ফুফু বললেন।

—– ” তোমার ভাইপোকে বলছি তোমার কথা। তোমার ভাই ভাবী এখন জেনে যাবেন, অামি তোমাকে এখানে কত কষ্টে রেখেছি।” ফুফা বললেন।

—– ” না, বলবে না। কারণ, তোমার কথা, মায়ের কথা ওকে অাসার পর পর বুঝিয়ে দিয়েছি। শোন শারতাজ, মানুষ যতই ভাল, মন্দ দুনিয়াতে করুক না কেন, তার হিসাব কিন্তু লেখা হয়ে যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী কর্মফল সবাই একদিন ভোগ করবে। অামি ঠিক সেই নীতিতে চলি। ইকরার দাদি যতকিছুই করুক না কেন, তার হিসাব তাকে আল্লাহর কাছে দিতে হবে। অামি শুধু অামার দ্বায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। তাই, অামাকে নিয়ে চিন্তা করবি না, তোর বাবা মাকেও চিন্তায় ফেলবি না। মনে থাকে যেন।”

ফুফুর কথার জোরে অামি অবাক হই, অাবার গর্ববোধও করি। কেননা, শিক্ষিত মানুষের সংজ্ঞা হয়তো এভাবেই প্রতীয়মান হয়।

প্রায় অনেক রাত পর্যন্ত কথা হলো অামাদের। ফুফা ফুফু চলে যাবার পর অামি মোবাইলের নেট অন করি। দেখলাম, ছোট চাচার ইয়া বড় মেসেজ মেসেঞ্জারে। তিনি তখনো জেগে ছিলেন অামার উত্তরের অাশায়। সখিনা বেগমকে নিয়ে অনেক বড় কৌতুহল তার। ছোট চাচা স্পষ্টবাদী স্বভাবের মানুষ। মুখের উপর মানুষের ভাল মন্দ দেখিয়ে দেন। সখিনা বেগমের ভুল ত্রুটি বহুবার তিনি সবার সামনে ধরিয়ে দিয়েছিলেন। যার কারণে, সখিনা বেগম তাকে দেখতে পারেন না। ছোট চাচা ফুফুর শ্বশুর বাড়ির সবার কথা জিজ্ঞেস করলেন। অামি তাকে সব না অনেককিছু বললাম। বেশিক্ষণ কথা হয়নি। পরে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে চোখ মেলতেই দেখি কুদ্দুস অামার পাশে দাঁড়িয়ে অাছে। অামি জেগেছি দেখেই হেসে বলল, ” অাপনে অামার হথায় দুখ পায়ছেন? রাতিয়ে অাপনারে অামি অাসলে ন চিনি? “( অাপনি অামার কথায় কষ্ট পেয়েছেন? রাতে অাপনাকে অামি অাসলে চিনি নি।) কুদ্দুসের কথা শুনে না হেসে পারলাম না। কেননা, সে অর্ধেক শুদ্ধ বাংলা, অর্ধেক অাঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছে। সকালটা শুরু হলো কুদ্দুসের সুন্দর কথায়।

নাস্তা খেতে খেতে দেখলাম। ফুফুর দেবরের কী যেন হারিয়ে গেছে? ইকরার দাদিকে দেখছি সবাইকে তা খুঁজে দিতে বলছেন। হঠাৎ, ইকরা এসে তার দাদির হাতে কয়েক হাজার টাকার নোট দিলো। ইকরার দাদী সখিনা বেগম তা দেখে বললেন, ” তুই চুরি হইজ্জুস দে না? টেয়া ফাইয়ি, চা, হনে চুরি হজ্জিই।” ( তুই চুরি করেছিস? টাকা পেয়েছি। দেখ কে চুরি করেছে।)

ফুফুকে দেখলাম ইকরাকে কোলে নিয়ে বললেন, ” আম্মু, তুমি টাকা কোথায় পেয়েছো? বল মামণি, কে দিয়েছে এই টাকা?”

দেখলাম ইকরার দাদি একনাগাড়ে বকে যাচ্ছেন এই ঘটনা নিয়ে। অামি ফুফুকে দেখলাম সে বেশ চিন্তিত। অামি বললাম, ” ফুফু কী হয়েছে? ইকরার হাতে এত টাকা কে দিল?”

ফুফু বললেন, ” অামার দেবরের টাকা পাওয়া যাচ্ছিল না। ইকরার হাতে তা পাওয়া গেছে।” অার বুঝতে বাকি নেই, এখানে ইকরাকে, চার বছরের বাচ্চাকে, দোষী বানানো হচ্ছে। বিষয়টা বেশ দুঃখজনক। অামি ইকরাকে ফুফুর কাছ থেকে কোলে নিয়ে বসি। কিছুক্ষণ পর মিজান এসে ইকরার চুল ধরে দিল টান। ইকরা অাবার কেঁদে উঠল।
মিজান তার দাদির কাছে যেয়ে বলল, ” দাদি, ইকরা অামার সব টাকা নিয়ে নিয়েছে। ”
মিজানের কথা শুনে বাড়ির সবাই চুপ। একদম নিরবতা।
অামি বলে উঠলাম, ” তুমি টাকা কোথায় পেয়েছো ভায়া?”

সে জবাবে বলল, ” আব্বুর পকেট থেকে।” মিজানের মুখে এই কথা শুনার পর মিজানের বাবা মিজানের গালে একটা চড় কষে দিলে। সঙ্গে সঙ্গে সখিনা বেগম বললেন ” তোর টাকা হয়তো ভুলে নিয়েছে। মারছিস কেন? বাচ্চামানুষ অত কিছু বুঝে। অামার দাদুভাই ভাল, তাই না? অামার দাদু ভাই কাঁদে না।”

এবার সখিনা বেগমের শুদ্ধ বাংলার কথাগুলো বেশ বুঝতে পেরেছি। অামি বললাম, ” মিজান চুরি করেছে। কাউকে বলে তো নেয়নি তাই না?” অামার কথা শুনে সবাই হা করে অামার দিকে তাকিয়ে থাকল। অামি অাবার সাহস দেখিয়ে বললাম, ” মিজান যদি সাত বছরের বাচ্চা হয়, ইকরা চার বছরের বাচ্চা। ওর টাকা নেওয়া যদি ভুলে নেয়া হয়, তাহলে ইকরার টাকা দেয়াকে কেন চুরি বলা হয়? ইকরা মেয়ে তাই? সিয়াম অার কাব্যের সন্তান তাই?”

ফুফুর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। অামি এবার একটু নরম সুরে বললাম, ” দুই জনেই বাচ্চা। দুইজনেই অাপনারই রক্তের অংশ, তবে নিজের সন্তানদের মধ্যে, নাতি নাতনির মধ্যে ভেদাভেদ কেন সবকিছুতে? ভাল, মন্দ বিচার করা উচিত কাজ দেখে, লিঙ্গ দেখে নয় কিংবা কারো দূর্বলতা দেখে নয়। এই যে ছেলে মেয়ে পার্থক্য করে যে বিচার করছেন, সেটার মন মানসিকতা এখন থেকে অাপনারা যদি তাদের মাঝে ঢুকিয়ে দেন, ভবিষ্যৎ এ ছেলেটা খারাপ কাজ করলেও ভেবে নেবে সে কোন অপরাধ করেনি। অার মেয়েটা অপরাধ না করেও অপরাধীর মন মানসিকতায় থাকবে। ভেবে দেখুন কাজটা কি ঠিক করছেন? তাদের মাঝে ভাল, মন্দ বিচার করার বা বুঝার শিক্ষাটা কি অাপনারা দিতে পারছেন? ছোট মুখে অনেক বড় কথা বলে ফেললাম। অাসলে না বলেও পারছি না। অামি এসেছি গতকাল সন্ধ্যায়। এসেই অনেককিছু দেখছি। বুঝতে পারছি না, অামি অাপনাদের ছোট হয়েও যেটা বুঝতে পারছি, অাপনারা এত বড় হয়েও কেন তা বুঝতে পারছেন না?”

অামার কথা শুনে সখিনা বেগমের চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেল। অামার ফুফুর দিকে তাকিয়ে শাসিয়ে অনেক কথা শুনিয়ে দিলেন।

ফুফু অামার কাছে এসে বললেন, “বড়দের মুখে মুখে কথা বলতে বারণ করেছিলাম না? তুই মেহমান, মেহমানের মত থাক।” বেশ বুঝতে পারছি, সখিনা বেগমের ভাষার জবাব দিলেন ফুফু রাগের বশে।

অামি ইকরাকে ফুফুর কোলে দিয়ে বললাম,” অামি চলে যাচ্ছি। অানীনের বাড়ি যাব। সেখানে কিছুদিন থাকব। ”

তারপর, বাড়ির সবার উদ্দেশ্যে বললাম, ” ক্ষমা করবেন। অাসলে চোখের সামনে অন্যায় দেখলে কিছু না বলে থাকতে পারি না। কারণ, একদিন আল্লাহর কাছে এর জন্য অামাকে জবাবদিহিতা করতে হবে। অামি বিশ্বাস করি, মানুষ দুনিয়াতে ভাল, মন্দ যত কিছুই করুক না কেন, তা অামলনামায় লেখা হচ্ছে, যেটার বিচার আল্লাহ একদিন করবেন। অাসলে, দুনিয়াতেও এর নমুনা পাওয়া যায়। ”

অামি অার দেরি না করে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ফুফু অামাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ” রাগ করে চলে যাচ্ছিস? শারতাজ বাবা, কথা দে, তোর বাবা মাকে কিছু বলবি না। অাসলে অামার শ্বাশুড়ির ব্লাড ক্যান্সার। বেশিদিন বাঁচবেন না। জীবনের শেষ মূহুর্তে তাই তাকে কষ্ট দিতে চাচ্ছি না। অামার বিয়ের পরই ধরা পড়ে।”

অামি ফুফুকে বললাম, ” এসব চিন্তা করেই তুমি তোমার শ্বাশুড়ির অামলনামা ভারি করছো। কারণ, তাকে তার ভুল ধরিয়ে দিচ্ছো না। তোমার মত শক্ত মনের মানুষ হতে পারিনি। তাই সহ্য হচ্ছে না। ইকরার দিকে খেয়াল রেখো। অামার জন্য দোয়া করো। কিছুদিন পর এস এস সি’র রেজাল্ট দিবে। অানীনকে অাগে থেকেই অাতুরার ডিপুর হাশেম বাজারে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছি। অামি তার সাথে সেখানে থেকে তাদের বাড়ি যাব। তাদের বাড়ি মুরাদপুরে।”

ফুফুর কাছ থেকে বিদায় নিলাম। ভাবতে লাগলাম, মানুষের জীবন যেমন বিচিত্রময়, চিন্তাভাবনা অারো বৈচিত্র্যময়। সম্পর্কের অবশিষ্ট সূতার বাঁধন ছাড়তে কেউ ইচ্ছুক নয়। তবুও, বোঝাপড়ায়, বাস্তব জটিলতার কোষাগাতে ঐ সুতাতেও টান পড়ে। যেমন সখিনা বেগমের সাথে তার ছেলে সিয়াম অার কাব্যের সম্পর্ক। সমাজজীবন বড় কঠিন সমীকরণে ভরা। অামরা মানুষরাই কঠিন করে ফেলেছি। লিঙ্গভেদে বৈষম্য কিংবা সম্পর্কের মূল্যবোধের বৈষম্য অাসলে পরিবার থেকেই সৃষ্টি হয়। এই সৃষ্ট বিবাদের মাঝেই ভালোবাসাটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়। সৃষ্টিকর্তার কাছে শুধু একটাই প্রার্থনা করব, পৃথিবীর সব জটিল সম্পর্কের মাঝে খোদা তুমি ভালোবাসার মায়াটা বাঁচিয়ে রাখিও।

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

১ Comment

  1. মেহেরুন্নেছা মিষ্টি।

    *যাব-> যাবো।
    *আধোঃ আধোঃ-> আদৌ আদৌ।
    *ধরে ধরে-> ধরেধরে।
    *পৌঁছলাম-> পৌঁছালাম।
    *পৌঁছতে-> পৌঁছাতে।
    *কন্ঠে-> কণ্ঠে।
    *ও হ্যা-> ও হ্যাঁ।
    *ঐ বাড়ির-> ওই বাড়ির।
    *শ্বাশুরী-> শ্বাশুড়ি।
    *ধর্ম কর্ম-> ধর্মকর্ম।
    *নাস্তা কর-> নাস্তা করো।
    *আর কোন-> আর কোনো।
    *ভাল-> ভালো।
    *মেজাজি স্বভাবের-> বদমেজাজি লিখলে ভালো হতো হয়তো।
    *হন্ড-> হণ্ড।
    *ঠান্ডা-> ঠাণ্ডা।
    *গেলো-> গেল।
    *আগমূহুর্ত-> আগমুহূর্ত।
    *শ্বশুর বাড়ি-> শ্বসুড়বাড়ি।
    *দিই-> দেই।
    *তাঁরা-> তারা হবে। কারণ (ঁ) কেবল সম্মানীত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করে থাকি।
    *মত-> মতো হবে। কেননা আমরা মত বলতে কেবল মতামত বুঝে থাকি।
    *পর পর-> পরপর হবে। এমন শব্দগুলো একসাথে বসে।
    *জবাবদিহিতা-> আপনি শুধু জবাবদিহি লিখতে পারতেন।
    *ঐ-> ওই।
    *সমাজজীবন-> সমাজ জীবন। দুটো আলাদা শব্দ তাই আলাদা বসবে।
    *রাখিও-> রেখো। লিখলে মন্দ হতো না।

    প্রিয় লেখিকা, আপনার গল্পের থিমটা ছিল অসাধারণ। কারণ আপনি সমাজের বাস্তব চিত্রকে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। সেজন্য আপনাকে জানাই অনেক ধন্যবাদ। বেশ ভালো লিখেছেন। তবে শেষটা আরো একটু বড় হতে বা গুছানো হতে পারতো। যাক সেটা বড় কথা না। আপনার জন্য রইল অনক শুভকামনা।

    Reply

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *