বুনোহাঁস
প্রকৃতির ঐ সাবলীল খেলা
ভাসাতে হয় আমাদের দুঃখের ভেলা
কষ্ট গুলোর মাঝে সুখেরই মেলা
খুবই হাস্যকর!
বাজি রেখে জীবন চালাতে হয়
জন্মেছি কোথায় তা অজানা,
বেড়ে উঠেছি রাস্তারই ধারে
পথই আমার জীবন-মরণ
পথ থাকলেই বাঁচি।
বৃষ্টিতে কারো অনুভূতি জাগে
আমাদের শুধু কষ্ট গুলোন ঝরে,
বিধির বিধান তা না যায় খণ্ডন
বেদনা শুধুই অন্তরে।
চাতক চেয়ে রয় শুধু বৃষ্টির পানে
তাতেই বিপদ আমার মরে যাই প্রাণে,
খোলা আকাশের নিচে বাস
বেচি বুট-বাদাম কিংবা বেলী ফুলের মালা
কখনো আবার হাওয়াই মিঠাইওয়ালা
কখনো হাতে উঠাতে হয় ভিক্ষার থালা
এভাবেই কেটে যায় দিন-রাত আমাদের মাস।
বৃষ্টি এলেই ভিড় জমে টঙ দোকানে
আড্ডাতে সবাই গলা মেলায়
এক পলকে চেয়ে থাকি রোজ বিকেল বেলায়
আমরা যে নিরুপায়,
রাস্তার বুকে পানি ভাসে
কাদা জমে থাকে এখানে-ওখানে
রাত গুলো কেটে যায় নির্ঘুম
আর দিন চলে যায় এক পেট খিদে নিয়ে!
ক্ষণেক্ষণে জল খাই
পিপাসার তৃঞ্চা মিটাই
কাজের খোঁজে এদিকওদিক যাই
দিনশেষে আমি রাস্তার ছেলে!
বর্ষা এলে যায় চলে
আমাদের আনন্দ
অন্য সবের প্রতীক্ষার ঋতু
চাইবো কিনা রয়ে যায় দ্বন্দ্ব।
কলাপাতা মাথায় দিয়ে চলতে হয় যে পথ
একটুখানি ভুল হলেই থেমে যাবে রথ,
সাথে করে নিয়ে আসবে সর্দি-জ্বর
মা নেইকো বুবুও নেই
কে করবে দেখভাল?
যে যার কাজে মত্ত
বিত্ত থাকলেও উনাদের দুর্বল চিত্ত
দেয় না তো আমাদের দিকে নজর।
বৃষ্টি এলেই গুটিয়ে যায় জীবন
তিক্ততা চলে আসে মনে
ভালোবাসা যে আমাদের মাঝেও আছে
তা জানে কয় জনে?
কবিত্বের বীজ বোনা আছে ঠিকই
কাগজ গুলো ভিজে যাবার ভয়ে
লেখা আর হয়ে উঠে না,
বিত্তিমানদের ভালোবাসা উথলে পড়ে বর্ষায়
তেমন করে আমাদের কষ্ট গুলো যদি উপচে পড়তো!
জীবন কতই সুন্দর,
যদি না থাকতো বর্ষা
বুকে আর বিঁধতো না বর্শা
শরতের মতো হেসে-খেলে দিন পার করতাম
আর ফুল, মালা কিংবা আচার-চকলেট বেচতাম
সাথে করে সুখ কিনে আনতাম।
পেট ভরে ভাত খেতাম
আর মন ভরে ঘুম
বুক ভরা স্বপ্ন দেখতাম
দিয়ে যেতো চুম!
মিনতি করে যাই দিনরাত
হতে যেন না হয় আমাদের কুপোকাত
না আসুক বর্ষা,
খেয়ে পড়ে আমরাও বাঁচি
দিন শেষ যেন লিখতে পারি সুখি মানুষদের আমরাও একাংশ।
—-০—-
সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন। বর্ষা আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসে, আর দরিদ্রদের জন্য হয় অভিশাপ। তাদের মাথা গোঁজার ঠাইটুকুরও নিশ্চয়তা থাকে না। আমাদের কাছে যেটা আনন্দ,সেটাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ধনীদের অর্থের সীমা থাকে না, তবুও তারা এদের যেনো দেখেও দেখে না। যদি বর্ষার এই অঝোর ধারা না থাকতো তবে তারাও সুখে হেসে খেলে দিন কাটাতে পারত।
সুন্দর, সাবলীল ভাষার কবিতা। তবে বেশ কিছু জায়গায় ছন্দপতন ঘটেছে। বিরামচিহ্নের ব্যবহারগুলো আরো সঠিকভাবে প্রয়োগ করা উচিৎ। বানানে খুব বেশি ভুল নেই।
বিত্তিমানদের- বিত্তবানদের
দিনশেষে- দিন শেষে।
প্রথমত এটি ছন্দ কবিতা নয়। আর বিরামচিহ্ন লেখক তার মনের মতন ব্যবহার করবে পাঠকের মতে নয়। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্য’র জন্য।
কষ্ট গুলোর – কষ্টগুলোর
গুলোন – গুলো (সম্ভবত)
চেয়ে রয় – রই
পথশিশুদের কষ্টগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।
ধনীরা চাইলে অনেক শিশু কষ্টকে ভুলে যাবে। কিন্তু ওরা নির্বোধ! (সবাই নয়)
কবিতায় বর্ষাকালের প্রাধান্যতা বেশি এসেছে।
অন্য সময়েও ওদের কষ্টের কথা তুলে ধরা যেতো।
ভালো লিখেছেন। শুভ কামনা রইল।
ভালো লাগলো
অসাধারণ একটি কবিতা পড়লাম।
মনোমুগ্ধকর কবিতা।শব্দচয়নও খুব ভালো।
খুব পরিপাটিও গুছিয়ে লিখেছেন।
পথশিশুদের নিয়ে কবিতা।সত্যিই পথশিশুদের একেক সময় একেক কাজ করে খেতে হয়।তাদের কোনো সুখ নেই।তবুও দিন শেষে সুখি।
কোথায় জন্মেছে তাদের অজানা থাকে।থাকে না বাবা মার আদর যত্ন।কোনোরকম খেয়ে পড়ে বাঁচে।
কষ্টের মাঝেই সুখের মেলা,তবে ধনীদের মতো অত সুখ নেই।বৃষ্টিতে সবার রোমান্টিক অনুভূতি ঝরে না।কারো কষ্টও ঝরে।
আর বর্ষাকালে তাদের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়।
মাথা গোজাবার মতো জায়গা থাকে না।
বানানেও কোনো ভুল চোখে পড়ে নাই তেমন
বিত্তমানদের–বিত্তবানদের
শুভ কামনা লেখকের জন্য।
সুন্দর থিম। অল্পকিছু বানান ভূল।
তবে,কবিতার ভাবানুবাদ শিহরণ জাগানোর মতোই!
যদিও ছন্দকবিতা নয়, তবে নিতান্ত কবিতার প্রয়োজনে শব্দ নির্বাচনে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।