রাজ রাজিব
.
করিয়া শূন্য,
হইলিরে তুই ভিন্ন,
ছাড়িয়া গেলি মোরে,
১৫ বছরের মায়া-মমতা সব দিয়া দিলাম তোর গোরে।।
.
এত আশা মোর,
করিয়া যে জোর,
নিয়তি নিলো কেড়ে,
চলে গেলি তুই আমাকে একলা ছেড়ে।।
.
১০ই অক্টোবর,
আসিয়া একটি ঝড়,
করিয়া দিলো সব তছনছ,
আমার সকল স্বপ্নে সেদিন নামিল যে ধস।।
.
দ্রুত গতির বাস,
করিলো সর্বনাশ,
পিছন থেকে মারিল ধাক্কা,
ছিটকে পড়িলাম আমরা সবে উল্টে গাড়ির চাক্কা।।
.
কতটা দূরে পড়ে,
তোর মা যন্ত্রণায় চিৎকার করে,
সেদিকে নাই মোর ধ্যান,
কী করিয়া আমি বাঁচাবো তোকে সেই ছিল মোর জ্ঞান।।
.
কোলে করিয়া তোকে,
টানিয়া নিলাম বুকে,
বললি তুই আস্তে করে,
বাঁচবো না আমি পানি খাওয়াও মোরে।।
.
শুনিয়া তোর কথা,
বুকে লইয়া ব্যথা,
পাগলের মতো খাওয়ালাম পানি,
সেই খাওয়া যে শেষ খাওয়া হবে তোর তা কি আমি জানি?
.
নিয়া সকলে,
দ্রুত হসপিটালে,
ডাকিলাম ডাক্তার,
ততক্ষণে মা শেষ নিঃশ্বাস ফুরাইছে তোমার।।
.
অচেতন হইয়া,
হসপিটালে শুইয়া,
রহিল তোমার মা,
আছে কি না বেঁচে তাও জানি না।।
.
তোকে নিয়া গাড়িতে,
গ্রামের বাড়িতে,
চলিলাম শেষযাত্রা,
আমার কলিজা ছিড়িয়া গেল, ছাড়াইল শোকের মাত্রা।।
.
শেষবারের মতোন,
করিয়া যতন,
দিয়া তোমারে গোসল,
বিদায় দিলাম ১৫ বছরের যত্নেগড়া ফসল।।
.
শেষবারের মতো,
ঢাকিয়া ক্ষত,
দেখিল তোমার মায়ে,
আহাজারিতে ভারী হইলো বাতাস ঢাকিলো শোকের ছাঁয়ে।।
.
করিয়া ক্রন্দন,
ভিজাইয়া নয়ন,
আসিলো বন্ধু শত,
না পাইয়া তোমায় কাঁদিল তাহারা শেষ জনমের মতো।।
.
কাপ থাকে খালি,
ডাকিয়া আরজ আলী,
চাহিবে না কফি আর,
শূন্য কাপটা তোমার কথা মনে করে বারবার।।
.
পুকুরেতে জল,
এখনো করে টলমল,
কাটে না কেউ সাঁতার সেথায়,
হাহাকার করে চারিদিক মোর থাকিতি যদি হেথায়।।
.
আরো কত রক্ত দিলে,
কত প্রাণ আর কেড়ে নিলে,
সড়কপথ হবে শান্ত,
কত জীবনের বিনিময়ে চালক চিরদিন হবে ক্ষান্ত।।
.
আর কত জল,
ফেলিলে মা বল,
ফিরিয়া আসিবি তুই,
অনেক ইচ্ছা জাগে আগের মতো তোকে একটু ছুঁই।।
নির্বাক_পাখি
হে কবি, শক্ত করে ধরো, তোমার অস্ত্র। আবারো, তোমার অস্ত্রের মধ্য দিয়ে, রক্তে রঞ্জিত করে দাও, এই শুভ্র ময়দান। হে কবি, শক্ত করে ধরো, তোমার অস্ত্র। যেভাবে, কবি নজরুল ধরেছিল, ইংরেজদের বিরুদ্ধে। যেভাবে, কবি সুকান্ত চেয়েছিল, ...
একটি দূর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি প্রিয় কবি।
পুরো কেঁদে ফেললাম, চোখে পানি এসে পড়ল কবিতাটা পড়ে। কতটা আবেগ নিয়ে একজন কবি এমন লেখা লিখতে পারে! মা অতি অমূল্য জিনিস, আল্লাহ সবার মাকে সুস্থ রাখুক এই দোয়াই করি। একটা সড়ক দূর্ঘটনায় মাকে হারিয়ে ছেলেটির বেদনা যেন আমার অন্তরে গিয়ে আঘাত করল। কবিতাটি নিয়ে আর কিছুই বলার নেই।
তবে একবার তুই, একবার তুমি সম্বোধনে পাঠে বিঘ্ন ঘটেছে।
ধস- ধ্বস।
অনেক শুভ কামনা প্রিয়।
কবিতাটি সংক্ষেপিত। আমি এখানে মূলত ১৫ বছরের কন্যার মৃত্যু বাবার আহাজারি বা জবানবন্দির মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। জানি না কতটা আপনারা ধরতে পেরেছেন। এটা সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত আমার নাট্যসহকর্মী অনন্যার মৃত্যুর ঘটনার বিবরণ। খুব মিষ্টি, দুষ্টু এবং চঞ্চল ছিল মেয়েটা। এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি। কবিতার অন্ত্যমিলের জন্য তুই এবং তুমি শব্দ ব্যবহার করেছি। আর কিছু বলতে পারছি না আমি, খুব কষ্ট হচ্ছে অনন্যার জন্যে…
.
ডিকশনারিতে আমার লেখা ধস শব্দটি সঠিক, ধন্যবাদ
কি বলবো বুঝতে পারছি না। মনের অজান্তেই দু ফোঁটা জল চোখ থেকে গড়িয়ে পড়েছে। এ যেন কবিতারূপ বাস্তবতার গল্প! ব্যাখ্যা করার ভাষা নেই। লেখকের প্রশংসা না করলেই নয়। সত্যিই অনেক ভালো লেগেছে।
অসাধারণ একটি কবিতা।
খুবই মর্মান্তিক প্রতিটি লাইন।
ছন্দেরও মিল আছে যথেষ্ঠ।
একটি দূর্ঘটনাই জীবন কেড়ে নিতে পারে।
সারা জীবনের কান্না।
জীবনে সর্বনাশ বয়ে আনে।
তাই চলার পথে সাবধানতা অবলম্ববন করতে হবে।
আসিবি–আসবে
শুভ কামনা রইলো।
বাহ্ বেশ ভালো লিখেছেন বলতে গেলে।তবে কবিতার মাঝে চলিত আর সাধু ভাষা মিশ্রণ ঘটে গিয়েছে যার জন্য কবিতার পড়ে তেমন তৃপ্তি পেলাম না। কোথায় জানে শুনেছি ভাষা মিশ্রণ ঘটালে কবিতার সুন্দর্য্য নষ্ট হয়ে যায়। যাইহোক কবিতার মাঝে অন্ত্যমিল ঠিক রেখেছেন, যদিও ছন্দ তেমন নেই। আসলে সত্যিই আজকাল রাস্তাঘাটে বেশ দূর্ঘটনা হচ্ছে। কবিতার মাঝে হারানোর বেদনা আর চালকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে। শুভ কামনা রইল।